পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিয়েছি। সেখান থেকে আমি মাঝে মাঝে উড়ে গিয়ে বড়ো বড়ে রাজা-রাজড়ার জানলা দিয়ে উকি মেরে ঐশ্বর্যের অনিত্যতা, অসারত আর আমার মেটে ঘরের প্রতিবেশীর ছোটো বাড়িখানার মধ্যে যে উচ্চ চিন্তা আর সাদাসিদে জীবনযাত্রার অমান কুমুমগুলি দিনের পর দিন ফুটে চলেছে তার অমরত উপলব্ধি করবার খুবই সুযোগ পেতাম। পণ্ডিতের পাতের ক্ষুদকুড়ো পেয়ে আমিও বাবুই সমাজে একজন মস্ত লোক বলে খ্যাতি পেলেম । কাজেই বাবুই সমাজটা কী প্রথায় চালালে সকলের সুবিধে হয় সেটা তদন্ত করবার ভার আমার উপর পড়েছে। কাজটা খুবই শক্ত, কেননা বাবুই পাখিরা যদি পাচজনে মিলে খালি স্থির হয়ে বসে বিবেচনা তর্ক-বিতর্ক করত তবে আমি তাদের অভাব অভিযোগ শুনে যা-হয় একটা সুব্যবস্থা করতে পারতাম–কিন্তু তা হবার জো নেই। একদণ্ড তারা স্থির হয়ে বসে থাকতে চায় না, কেবলই চুলবুল করে, বাজে কথা নিয়ে কিচিমিচি করা নয় তো অকারণে নিজে নিজে ঝগড়া মারামারি করাই তাদের কাজ ; কাজের কথা এলেই সরে পড়ে । আজকাল ববং বাবুই দলে নানা বিষয় নিয়ে চর্চা করবার একটু চেষ্টা দেখা যাচ্ছে, আমি কিন্তু যে সময়ের কথা বলছি, তখন এ-সব কিছুই ছিল না, বাবুই তখন কেবলি উড়ত, নীতিচর্চ কিংবা ধর্মচর্চার ধার দিয়েও যেত না । এ পাড়ার চিলের ছাতের ওপর বাসটি নেবার আগে দু-বছর আমি একট। কাঠির খাচার মধ্যে বন্ধ ছিলেম যখনই আমার তেষ্টা পেত তখনই আমায় এতটুকু একটি দড়ি বাধা বোকুনো করে জল তুলতে হত। সবাই চড়ই পাখির জল তোলা দেখে ভারি আমোদ পেত আর কালে চাপদাড়িওয়াল মানুষটা এই পাখির তামাসা দেখিয়ে যা রোজগার করত তা থেকে তুবেল গুলি ছাতু ছাড়া আর বেশি কিছুই খামার জন্যে বন্দোবস্ত করত না । খাচা ছেড়ে পালিয়ে পাড়ার স্থা চার জন আলাপী বাবুইকে যখন আমার দুঃখের কাহিনী জানালেম তখন সবাই আমাu খুব আদর-যত্ন করতে লাগল। সেই সময়েই আমি বেশ করে নানা পক্ষীসমাজের চাল 88ፃ