পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গমগম করছে, এমন সময়ে কর্তাদাদামশায়ের সেখানে প্রবেশ । সভাস্থল নিস্তব্ধ, কর্তাদাদামশায় বসলেন একটা কোঁচে পা-দুখানি একটু বের করে দিয়ে। কারো মুখে কথাটি নেই। শ’বাজারের রাজা ছিলেন কর্তাদাদামশায়ের বন্ধু, র্তার মনেও একটু যে ভয় ছিল না তা নয়। তিনি তখন সভার ছেলেছোকরাদের কর্তাদাদামশায়ের পায়ের দিকে ইশারা করে বললেন, দেখ, তোরা দেখ, একবার চেয়ে দেখ, এ দিকে, একেই বলে বড়োলোক । আমব যা গলায় মাথায় ঝুলিয়েছি ইনি তা পায়ে রেখেছেন । কর্তাদাদামশায় খুব হিসেবী লোক ছিলেন। মহর্ষিদেব হয়েছেন বলে বিষয়সম্পত্তি দেখবেন না তা নয়। তিনি শেষ পর্যন্ত নিজে সব হিসেবনিকেশ নিতেন । রোজ তাকে সব রকমের হিসেব দেওয়া হত । কর্তাদাদামশায় নিজে আমাদের বলেছেন যে তাকে রীতিমত দপ্তরখানায় বসে জমিদারির কাজ সব শিখতে হয়েছে । তিনি যে কতবড়ো হিসেবী লোক ছিলেন তার একটি গল্প বলি, তা হলেই বুঝতে পারবে। একবার যখন উনি শিমলে পাহাড়ে, বাড়িতে কোনো মেয়ের বিবাহ। উনি শিমলয় বসে চিঠি লিখে সব বিধিব্যবস্থা দিচ্ছেন। সেই চিঠি আমরাও দেখেছি। তাতে না লেখা ছিল এমন বিষয় ছিল না । কোথায় চাদোয় টাঙাতে হবে, কোথায় অতিথিঅভ্যাগতদের বসবার জায়গা করা হবে, কোথায় লোকজনের খাওয়াদাওয়া হবে, দালানের কোন জায়গায় বিয়ের আসর হবে, কোন দিকে মুখ করে বর কনে বসবে, পাশে সপ্তপদীর সাতখান আসন কী ভাবে পাতা হবে, অমুক বরকে আসরে আনবে, অমুক কনেকে আসরে আনবে— খুঁটিনাটি কিছুই বাদ ছিল না। নিখুঁতভাবে সব ব্যবস্থা লিখে দিয়েছেন, এত সব লিখে শেষটায় আবার লিখেছেন যে সপ্তপদী-গমনের পর ওই সাতখান আসন মছনদ ও ঝাড় দুটো বিবাহ-অনুষ্ঠানের পর বাড়ির ভিতরে যাবে। বাসরে সে-সব সাজিয়ে দেওয়া হবে, বর কনে তার উপর বসবে। " কর্তাদাদামশায় লোকদের খাওয়াতে খুব ভালোবাসতেন, আর বিশেষ করে র্তার ঝোক ছিল পায়েসের উপর । ছোটোপিসেমশায়ের কাছে গল্প শুনেছি, তিনি বলতেন কর্তামশায়ের সামনে বলে খাওয়া সে এক বিপদ। প্রথমত কিছু তো ফেলবার জো নেই—অপর্যাপ্ত পরিবেশন করা হবে, সব তো পরিষ্কার করে খেতে হবে। সে তো কোনোরকমে সারা হত, কিন্তু তার পরে যখন "ליל