পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নোটগুলি সব ওই দিদিমার কাছ থেকে পাওয়া । আমার তখন বিয়ে হয়েছে । দিদিমা বউ দেখে খুশি ; বলতেন, বেশ খাস বউ হয়েছে, দেখি কী গয়নাটয়ন দিয়েছে। ব’লে নেড়ে-চেড়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখতেন। বলতেন, বেশ দিয়েছে, কিন্তু তোরা আজকাল এই রকম দেখা-গয়না পরিস কেন ? আমি বলতুম, সে আবার কী রকম। দিদিমা বলতেন, আমাদের কালে এ রকম ছিল না, আমাদের দস্তুর ছিল গয়নার উপরে একটি মসলিনের পটি বাধা থাকত । আমি বলতুম, সে কি গয়না ময়লা হয়ে যাবে বলে। তিনি বলতেন, না, ঘরে আমরা গয়না এমনিই পবতুম, কিন্তু বাইবে কোথাও যেতে হলেই হাতের চুড়ি-বাল-বাজুর উপরে ভালো করে মসলিনের টুকরো দিয়ে বেঁধে দেওয়াই দস্তুর ছিল তখনকার দিনে। ওই মসলিনের ভিতর দিয়েই গয়নাগুলো একটু একটু বক্‌বক্‌ করতে থাকত। দেখা-গয়না তো পরে বাঈজী নটরা, তারা নাচতে নাচতে হাত নেড়েচেড়ে গয়নার ঝকৃমকানি লোককে দেখায়। খোলা-গয়নার ঝক্‌মকানি দেখানে, ও-সব হচ্চে ছোটোলোকি ব্যাপার । খুব পুরোনো মোগল ছবিতে আমারও মনে হয় ও রকম পাতলা রঙিন কাপড় দিয়ে হাতে বাজু বাধা দেখেছি। ওই ছিল তখনকাব দিনের দস্তুর । এই দেখা-গয়নার গল্প আমি আর কারে কাছে শুনি নি, ওই দিদিমার কাছেই শুনেছি। তখনকার মেয়েদের সাজসজ্জার আর-একটা গল্প বলি । ছোটোদাদামশায়ের আর বিয়ে হয় না। কর্তী দ্বারকানাথ ষোলো বছব বয়সে ছোটোদাদামশায়কে বিলেত নিয়ে যান, সেখানেই তার শিক্ষাদীক্ষা হয় । দ্বারকানাথের ছেলে, বড়ে বড়ো সাহেবের বাড়িতে থেকে একেবারে ওই দেশী কায়দাকাকুনে দোরস্ত হয়ে উঠলেন । আর, কী সম্মান সেখানে র্তার। তিনি ফিরে আসছেন দেশে । ছোটোদাদামশায় সাহেব হয়ে ফিরে আসছেন—কী ভাবে জাহাজ থেকে নামেন সাহেবি স্কুট পরে, বন্ধুবান্ধব সবাই গেছেন গঙ্গার ঘাটে তাই দেখতে। তখনকার সাহেবি সাজ জানো তো ? সে এই রকম ছিল না, সে একটা রাজবেশ – ছবিতে দেখো । জাহাজ তখন লাগত খিদিরপুরের দিকে, সেখান থেকে পানসি করে আসতে হত। সবাই Y 6 &