পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যাচ্ছে । গরম গরম সন্দেশ খাওয়ান দেখি । বেশ গরম গরম চায়ের সঙ্গে গরম গরম সন্দেশ খাওয়া যাবে । শুনে টেবিলসদ্ধ সবার হো-হে করে হাসি । তক্ষুনি হুকুম হল, খাবার ঘরেব দরজার সামনেই হালুইকর বসে গেল। গরম গরম সন্দেশ তৈরি করে দেবে ঠিক খাবার সময়ে। রাউণ্ড টেবিল কনফারেন্স বসল। গোল হয়ে সবাই বসেছি। মেজেজ্যাঠামশায় প্রিসাইড করবেন। ন-পিসেমশাই জানকীনাথ ঘোষাল রিপোর্ট লিখছেন আর কলম ঝাড়ছেন , তার পাশে বসেছিলেন নাটোরের ছোটো তরফের রাজা, মাথায় জরির তাজ, ঢাকাই মসলিনের চাপকান পরে। ন-পিসেমশাই কালি ছিটিয়ে ছিটিয়ে তার সেই সাজ কালে বুটিদার করে দিলেন । আগে থেকেই ঠিক ছিল, রলিকাক প্রস্তাব করলেন প্রোভিন্সিয়াল কনফারেন্স বাংলা ভাষায় হবে । আমরা ছোকবার সবাই রবিকাকার দলে , আমরা বললুম, নিশ্চয়ই, প্রোভিন্সিয়াল কনফারেন্সে বাংলা ভাষার স্থান হওয়াণ্ডাই । রবিকাকাকে বললুম, ছেড়ে না, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব এজন্য। সেই নিয়ে আমাদের বাধল চাইদের সঙ্গে । তারা আর ঘাড় পাতেন না, ছোকরার দলের কথায় আমলই দেন না। তারা বললেন, যেমন কংগ্রেসে হয় তেমনি এখানেও হবে সব-কিছু ইংরেজিতে । অনেক তক্কাতঙ্কির পর দুটো দল হয়ে গেল । একদল বলবে বাংলাতে, একদল বলবে ইংরেজিতে। সবাই মিলে গেলুম প্যাণ্ডেলে । বসেছি সব, কনফারেন্স আরম্ভ হবে । রবিকাকার গান ছিল, গান তো আর ইংরেজিতে হতে পারে না, বাংলা গানই হল । ‘সোনার বাংলা’ গানটা বোধ হয় সেই সময়ে গাওয় হয়েছিল—রবিকাকাকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিয়ো । এখন, প্রেসিডেন্ট উঠেছেন স্পীচ দিতে , ইংরেজিতে যেই-ন মুখ খোল আমরা ছোকরার যারা ছিলুম বাংলা ভাষার দলে সবাই একসঙ্গে চেচিয়ে উঠলুম – বাংলা, বাংলা । মুখ আর খুলতেই দিই না কাউকে । ইংরেজিতে কথা আরম্ভ করলেই আমরা চেচাতে থাকি – বাংলা, বাংলা । মহা মুশকিল, কেউ আর কিছু বলতে পারেন না । তবুও ওই চেচামেচির মধ্যেই দু-একজন দু-একটা কথা বলতে চেষ্টা করেছিলেন । লালমোহন ঘোষ ছিলেন ঘোরতর ইংরেজিজুরস্ত, র্তার মতে ইংরেজিতে কেউ বলতে পারত না, তিনি ছিলেন } a s