পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখতে পাব। কালীকেষ্ট ঠাকুরের দুই মেয়েও ছিলেন আমার পাশে। বড়ে হয়েও এই সেদিনও সেই থিয়েটার দেখার গল্প হত আমাদের ; বলতেন, মনে আছে আমাদের থিয়েটার দেখা ? আমি বলি, মনে নেই আবার – যা চিমটি কেটেছিলে পাশে বসে ! বসে আছি, ড্রপসিন পড়ল, তাতে আঁকা ইউলিসিসের যুদ্ধযাত্র। রাজপুত্তর নৌকোতে চলেছে, জলদেবীদের সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছে, পিছনে পাহাড়ের সার – গ্রীক-যুদ্ধের একটা কপি । কোনো সাহেবকে দিয়ে আঁকিয়েছিল বোধ হয়, প্রকাও সেই ছবি। নৌকো থেকে গোলাপফুলের মালা ঝুলছে, কী ভালো যে লাগছে, তন্ময় হয়ে দেখছি । সিন উঠল। ভামশা মন্ত্রী ইয়া লম্ব দাড়ি, রাজপুত্তর, দ্বন্দ্বযুদ্ধ, তলোয়ারের কক্‌মকানি, হাসিকান্না – ডুবে গেছি তাতে । অভিনয় হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে কথা মুখস্থ হয়ে যাচ্ছে । মলিন সেজেছিল সুকুমারী দত্ত। স্টেজ-নাম ছিল গোলাপী, সে যা গাইত ! বুড়ে বয়সেও শুনেছি তার গান, চমৎকার গাইতে পারত। মিষ্টি গলা ছিল, তার, অমন বড়ে শোনা যায় না। আর কী অভিনয়, এক হাতে পিদিমটি ধরে শাড়ির আঁচল দিয়ে ঢাকতে ঢাকতে আসছে, যেন ছবিটি --- এখনো চোখে ভাসছে। পৃথ্বীরাজ আর মলিনার গান, এখনো কানে বাজছে সে স্বর— এ স্বর্থ-বসন্তে সই কেন লো এমন আপন-হারা বিবশ– ওইটুকু ছেলের মন একেবারে তোলপাড় করে দিলে। ভীল সর্দার সেজেছিলেন অক্ষয় মজুমদার। এ চেনী বুড়ি বলে যখন অশ্রীমতীর খুতি ধরে আদর করছে, তা ভুলবার নয়। আর ভীলদের মতো সেজে, মাথায় পালকগুজে তীরধমুক নিয়ে সে যা নাচলেন, আর গাইলেন—- ক্যায়স কাহারোয় জাল বিমুরে, জাল ৰিমু জ্বাল বিমু জাল বিনু রে । দিমকো মারে মছলি, রাতকো বিনু জাল, আর অ্যাক্স ফেক্ষারী কিয়া জিয়া কি জঞ্জাল। এই বলে অক্ষয়বাবুর নৃত্য, এই নৃত্যতেই ছোটাে ছেলের মন একেবারে জয় করে নিলেন। সৈই থেকে আমি তাকে কমিক অভিনয়ে গুরু বলে মেনে 8 રાઝ