এইবার ঈশ্বরবাবুও পথে এলেন। ত রবিকাকার লেখা দেশের লোক অনেকেই অনেককাল অবধি বুকত না, উণ্টে গালাগালি দিয়েছে। সেদিনও যখন আমি অসুখের পর স্ট্রীমারে বেড়াই, তখন তো আমি বেশ বড়োই, এক ভদ্রলোক বললেন, রবিবাবু যে কী লেখেন কিছু বোঝেন মশায় ? রবিকাকা বিলেত থেকে আসার পর দেখি তেমন আর কেউ উচ্চবাচ্য করে না । হয় কী, বড়ে একটা গাছের উপর হিংসে, সেটা হয়। বন্ধুভাগ্য যেমন ওঁর বেশি, অবন্ধুও কম নয়। তা, সেই খামখেয়ালীর সময় দেখেছি, কী প্রোডাকশন ওঁর লেখার, আর কী প্রচণ্ড শক্তি। নদীর যেমন নানা দিকে ধারা চলে যায়, তার ছিল তেমনি । আমাদের মতো একটা জিনিস নিয়ে, ছবি হচ্ছে তো ছবি নিয়েই বসে থাকেন নি। একসঙ্গে সব ধারা চলত। কংগ্রেস হচ্ছে, গানবাজনা চলেছে, নাচও দেখছেন, সামান্য আমোদ-আহলাদ-আনন্দও আছে, আর্টেরও চর্চা করতেন তখন। ওই সময়ে আমাকে মাইকেল এঞ্জেলোর জীবনী ও রবিবর্মার ফোটোগ্রাফের অ্যালবাম দিয়েছিলেন। খেয়ালী গেল ছোটোদের স্কুল করতে হবে । নীচের তলায় ক্লাস-ঘর সাজানো হল বেঞ্চি দিয়ে, ঝগডু চাকর বাড়পোছ করছে, ঘণ্টা জোগাড় হল, ক্লাস বসবে। কোখের মাস্টার ধরে আনলেন । কোথায় কী পাওয়া যাবে, রবিকাক জানতেনও সব । হাল্কাভাবে কিছু হবার জো নেই, যেটি ধরছেন নিখুঁতভাবে স্বসম্পন্ন করা চাই । ছেলেদের উপযোগী বই লিখলেন, আমাকে দিয়েও লেখালেন। ওই সময়েই ক্ষীরের পুতুল’ ‘শকুন্তলা’ ওই-সব বইগুলি লিখি। নানা জায়গা থেকে বাল্যগ্রন্থ আনালেন । প্রকাও ইনটেলেক্ট, অমন আমি দেখি নি আর । বটগাছ যেমন নানা ডালপালা ফুলফল নিয়ে আপনাকে প্রকাশ করে রবিকাকাও তেমনি বিচিত্র দিকে ফুটে উঠলেন। যেটা ধরছেন এমন-কি ছোটোখাটে গল্প, তাতেও কথা কইবার জো নেই, সব-কিছু এক-একটি সম্পদ। লোকে বলে এক্সপিরিয়েন্স নেই, কল্পনা থেকে লিখে গেছেন, তা একেবারেই নয়। লোকে খামখেয়ালীর যুগে থাকলে বুঝতে পারত। মাথায় এল স্কাশনাল কলেজ কী করে করা যাবে । তারক পালিত দিলেন লক্ষ টাকা, স্বদেশী যুগের টাকাও ছিল কিছু, তাই দিয়ে বেঙ্গল টেকনিক্যাল . Soo