পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগে অন্দরে যেতে পারতুম যখন-তখন । আজকাল সেই-যে চাকররা সকালবেলা আমায় বের করে আনে অন্দর থেকে, সারাদিনে আর ভিতরে ঢুকবার হুকুম নেই, তবু দু-এক ফঁাকে ঢুকে পড়ি অন্দরে । মা ব্যস্ত ছোটোভাইকে নিয়ে । মুনয়নী বিনয়িনী ছোটোবোন—তাদের সঙ্গে খেলতে খেলতে খেলনা একটা ভেঙে গেল কি তার কাদতে শুরু করে দিলে, ‘অ্যা, অবনদাদ আমাদের পুতুল ভেঙে দিলে। অমনি তাড়া লাগায় আমায় সকলে, ‘তুই এখানে কেন ? যা বাইরে যা । সেখানে গিয়ে খেলা কর। তাড়া খেয়ে বাইরে চলে আসি । বাইরে এসে ভাবের লোক আর পাই নে কাউকে । সবাই দেখি তাড়া লাগায়, ধমক দেয় । বাবামশায়ের ছিল পোষা একটি কাকাতুয় গোলাপি রঙের। বারান্দার দেয়ালে টাঙানো হরিণের শিঙের উপর বসে থাকে, কী কুন্দর লাগে দেখতে । সকালবেলা মা পান সাজেন ; মার কাছে গিয়ে পানের বোটা খায় । ছোটোপিসিমার কাছে ছোল খায় ; আবার এসে শিঙের উপর উঠে বসে । ভাবলুম এবার মানুষ ছেড়ে পশুপাখির সঙ্গেই ভাব করা যাক । এই ভেবে কাকাতুয়ার কাছে গিয়ে দাড়াতেই ঝুটি তুলে গায়ের পালক ফুলিয়ে সে এল তেড়ে আমায় ঠোক্রাতে। ভাব করা থাকুক পড়ে, ছুটে পালিয়ে বাচি সেখান থেকে। তার ডানার তলায় তলায় বাবামশায় নিজের হাতে পাউডার মাখান । পাউডার মেখে সে মেমসাহেব হয়ে টি বাগিয়ে বসে থাকে। গুমোর কী তার, সে করবে। আবার আমার সঙ্গে ভাব! ভয়ে আর সে দিক দিয়েই যাই নে । বাবামশায়ের আদরের কুকুর কামিনী। কী তার আদরযত্বের ঘট । কামিনীর জন্য আলাদা চাকর মেথর । তাকে যখন সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে স্নান করিয়ে, গায়ে পাউডার মাখিয়ে, পরিপাটি করে আঁচড়ে সিথি কেটে, সাজিয়ে-গুজিয়ে ছেড়ে দেয়, আর কামিনী ঘুরঘুর করে ঘুরে বেড়ায়, যেন বাড়ির খেদি মেয়েটি । বাড়ির ছেলে আমাদেরও অত আদর্যত্ব হয় না, যত হয় কামিনীর। সেই কামিনীর কাছে যাই । সে আমায় তোয়াক্কাই করে না, লেজ নেড়ে চলে যায় বাবামশায়ের ঘরের দিকে । ছোট্ট ছোট্ট একজোড়া পোষা বাদরও আছে বাবামশায়ের । কত তাদের আদরই বা । গ্রেট ঈস্টার্ন, হোটেল থেকে বাদরের জন্য স্পেশাল লাল টুকটুকে تاسيوم