পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওটি শিষ্ট ধাক্কুর, ওঁতোয় নাকে— কান ছুটো ওর মুচড়ে ধর্। হায় রে সাহেব বেলাক ॥ এই আমার প্রথম গান শেখা। ব্ল্যাক্ইয়র সাহেব রোজ ঘোড়ায় চড়ে বেড়িয়ে ফেরবার সময় গম্বুলাবাড়ি গিয়ে গয়লানীর কাছে এক পো করে দুধ খেতেন। পাড়ার লোকে এই দেখে তার নামে গান বেঁধেছিল । (t জোড়াসাকোর দুটো স্বতন্ত্র বাড়িই তো এখন দেখছ ? আসল জোড়াসাকোর বাড়ি এবার বুঝে দেখো । সে ছেলেবেলার জোড়াসাকোর বাড়ি তো আর নেই। দুটো বাড়ির একটা তো লোপাট হয়ে গেছে, একটা আছে পড়ে। আগে ছিল দু-বাড়ি মিলিয়ে এক বাড়ি, এক বাগান, এক পুকুর, এক পাচিলে ঘেরা, এক ফটক প্রবেশের, এক ফটক বাইরে যাবার। যেমন এই উত্তরায়ণ, এক ফটক— ভিতরে উদয়ন, কোণার্ক, হ্যামলী, পুনশ্চ, উদীচী, সব মিলিয়ে এক বাড়ি, জোড়াসাকোর বাড়িও ছিল তেমনি । এক কর্তা দ্বারকানাথ, তার পর দেবেন্দ্রনাথ তার পর রবীন্দ্রনাথ— এই তিন কর্তা পর পর । অনেকগুলো ঘর, অনেকগুলে। মহল, অনেকখানি বাগান জুড়ে দুই বাড়ি মিলিয়ে একবাড়ি ছিল ছেলেবেলায় জোড়াসাকোর ঠাকুরবাড়ি । এ-বাড়ি ওবfড় বলতুম মুখে, কিন্তু ছেলেবুড়ে চাকরবাকর সবাই জানতুম মনে, দুখান বাড়ি এক বাড়ি। কারণ, এক কর্তা ছিল ; একই নম্বর ছিল, ৬ নং দ্বারকানাথ ঠাকুরের গলি । একই ফটক ছিল প্রস্থান-প্রবেশের। সেই একই ভালাভাঙা লোহার খোল। ফটক ; তার এক ধারে একটি বুড়ে নিমগাছ, তার কোটরে কোটরে পাপছয়, টুনটুনি পাখিদের বাসা ; আর-এক ধারে একটি মাত্র গোলকচাপার গাছ, আগায় ফুল গোড়ায় ফুল ফুটিয়ে। এই ফটককে খামমিস্ত্রি মাঘোৎসবের দিনে লোহার কিরীট পরাত ; তাতে আলোর শিখায় জলত একমেবাদ্বিতীয়ম্ । জোড়াসাঁকে নাম ছিল বাড়ির, ছুটে বাড়িও ছিল বটে, কিন্তু ওই দুই সাকোর তল দিয়ে যে এক নদীর স্রোত বইত ; সে দিন আর নেই, সে বাড়িও আর নেই। এক ঘণ্টা পড়ত ও-বাড়িতে সকাল ছটায় ; এ-বাড়িতে উঠতুম সেই শব্দ শুনে চাকর-দাসী ছেলে-মেয়ে, মনিব, সবাই। সাতটার ঘণ্টা পড়ত, তখন যে 令e》