পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বসে, হামন্বন্দরও আছেন। ঘরে ফুলের ছড়াছড়ি । বাবামশায়ের সামনে গোলাপজলের পিচকারি, কাচের গড়গড়, তাতে গোলাপজলে গোলাপের পাপড়ি মেশানে, নলে টান দিলেই জলে পাপড়িগুলো ওঠানামা করে । সেবার এক নাচিয়ে এল। ঘরের মাঝখানে নন্দ ফরাস এনে রাখলে মস্ত বড়ো একটি আলোর ডুম । নাচিয়ে ডুমটি ঘুরে ঘুরে নেচে গেল। নাচ শেষ হল ; পায়ের তলায় একটি আলপনার পদ্ম অণক । নাচের তালে তালে পায়ের আঙ্গুল দিয়ে চাদরের নীচের আবির সরিয়ে সরিয়ে পায়ে পায়ে আলপনা কেটে দিলে । অদ্ভুত সে নাচ । বৈঠকখান আর দেউড়ির উৎসব, এ দুটাের মধ্যে আমার লীগত ভালো রাজপুত দরোয়ানদের উৎসবটাই। বৈঠকখানায় শখের দোল, শৌখিনতার চুড়ান্ত— সেখানে লটুকানে-ছোপানো গোলাপি চাদর, আতর, গোলাপ, নাচ, গান, আলো, ফুলের ছড়াছড়ি। কিন্তু সত্যি দোল-উৎসব করত দরোয়ানরাই— উদ্দণ্ড উৎসব, সব লাল, চেনবার জে নেই । সিদ্ধি খেয়ে চোখ দুটো পর্যন্ত সবার লাল। দেখলেই মনে হত হোলিখেল এদেরই। শখের খেলা নয়। যেন যার রক্তের হোলি খেলতে জানে, এ তাদেরই খেলা, কৃত্রিম কিছু নেই। দেখলে না সেদিন সাওতালদের উৎসব ? কৃত্রিমতা ঘেঁসতে পায় না সেখানে । তারা মনের আনন্দে উৎসব করে, আনন্দে নাচে গায়, তাতে তারা মেতে যায়। বৈঠকখানার উৎসব ছিল কৃত্রিম, তাই তা ভালো লাগত না আমার । দেউড়ি আর বৈঠকখানায় ছিল এইরকম দোল-উৎসব, মীর আমাদের জন্য আসত টিনের পিচকারি। ওইতেই আনন্দ । টিনের পিচকারি বালতি-ভর লাল জলে ডুবিয়ে, যাকে সামনে পাচ্ছি পিচকারি দিয়ে রঙ ছিটিয়ে দিচ্ছি আর তারা চেচামেচি করে উঠছে, দেখে আমাদের ফুতি কী। বাড়ির ভিতরে সেদিন কী হত জানি নে, তবে আমাদের বয়েসে খেলেছি দোলের দিনে— আবির নিয়ে এ-বাড়ি ও-বাড়ির অন্দরে ঢুকে বড়োদের পায়ে দিতুম, ছোটোদের মাথায় মাখাতুম। বড়োদের রঙ মাখাবার হুকুম ছিল না, তাদের ওই পা পর্যন্ত পৌঁছত আমাদের হাত । এই তো গেল দোলপূর্ণিমার কথা। এখন আর-এক কথা শোনো। বাবামশায়ের সমশের কোচোয়ান, আস্তাবলবাড়ির দোতলার নহবতখানায় থাকে। তিনটে বাজলেই সে বেরিয়ে এসে বসে আস্তাবলের ছাদে খাটিয়া পেতে, ফরসি दे => VA SIIS 8