পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গড়তেও আমার কষ্ট হয় না । , সেখানে হাত চোখ আর মন কাজ করে। অন্ত আর কিছু ভাবতেও ইচ্ছে করে না। রবিক যে বৈকুণ্ঠের খাতায় তিনকড়ির মুখ দিয়ে আমাকে বলিয়েছিলেন ‘জন্মে অবধি আমার জন্যেও কেউ ভাবে নি আমিও কারে জন্য ভাবতে শিখি নি’, এই হচ্ছে আমার সাভ্যকারের রূপ। রবিক। আমাকে ঠিক ধরেছিলেন। তাই তো তিনকড়ির পার্ট অমন আশ্চর্য রকম মিলে গিয়েছিল আমার চরিত্রের সঙ্গে। ও-সব জিনিস অ্যাক্টং করে হয় না। করুক তো আর কেউ তিনকড়ির পার্ট, আমার মতো আর হবে না। ওই তিনকড়িই হচ্ছে আমার আসল রূপ। আমি নিজের মনে নিজে থাকতেই ভালোবাসি। কারে জন্য ভাবতে চাই নে, আমার জন্যও কেউ ভাবে তা পছন্দ করি নে। চিরকালের খ্যাপা আমি । সেই খ্যাপামি আমার গেল না কোনোকালেই। আমার নামই ছিল বোম্বেটে । দুরন্তও ছিলুম, আর যখন যেটা জেদ ধরত্নম সেটা করা চাইই । তাই সবাই আমার ওই নাম দিয়েছিলেন । রবিকারাও চিরকাল ওই খ্যাপা’ ‘পাগলা’ বলে আমাকে ডাকতেন । আমিও যেন তাদের কাছে গেলে ছোট ছেলেটি হয়ে যেতুম । এই সেদিনও রবিকাদের কাছে গেলেই আমার বয়স ভুলে আমি যেন সেই পাগল খ্যাপা হয়ে যেতুম। তারাও আমায় সেইভাবেই দেখতেন । কিছুকাল আগে যখন সন্ত্রীক শাস্তিনিকেতনে এসেছিলেম, রবিকার হুকুমে প্রতুিম ও কারপ্লে ওরা মিলে আমার থাকবার জন্য ঘর সাজিয়েছে যেন একটা বাসরঘর। আমি আবার আস্তে আস্তে সব তুলে রাখি, কী জানি কোনটা ময়লা হয়ে যাবে। নিজের বিছানাপত্র খুলে নিই। সকালে উঠেই আমাকে এই বকুনি, ন, ও-সব তুমি কী করছ!’ ব’লে আবার সেইভাবে ঘরদোব সাজিয়ে দেওয়ালেন । জ্যোতিকাকার কাছে রাচিতে গেলুম, তখন তো আমি কত বড়ো, ছেলেপুলে নাতিনাতনি আমার চার দিকে। জ্যোতিকাকামশায় রোজ সকালে টুং টুং করে রিকৃশ বাজাতে বাজাতে বেড়িয়ে ফিরতেন। কোলের উপর একটি কেকের বাক্স। রিকৃশ থেকে নেমে কেকের বাক্সটি আমার হাতে দিয়ে বলতেন, ‘অবন, তোমার জন্য এনেছি, তুমি খেয়ে ’ ঘরভরতি নাতিনাতনি, সে-সব ফেলে আমার জন্য নিজের হাতে বাজার থেকে কেক কিনে আনলেন । এনে আমার হাতে দিয়ে বারে বারে বললেন, ‘তুমি খেয়ে কিন্তু, তোমার জন্যেই এনেছি। আমি মহা অপ্রস্তুতে পড়তুম। বলতুম, “আপনি কেন কষ্ট ૨૮. 8