পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিয়ে খাটিয়ে নিলে কোমর বেঁধেই লাগতম, কাজও ভালো হত। আসলে ভিতরে তাগাদাও ছিল কিনা একটা । তবে না করিয়ে নিলে ছবিও আমার হত না বোধ হয়। বড়ো কুঁড়ে স্বভাব আমার ছেলেবেলা থেকেই ; কোথাও নড়তে পর্যন্ত ইচ্ছে করে না। অথচ দেখতুম তো চোখের সামনে রবিকাকা ; তিনিও তো আর-একটি আর্টস্ট, পৃথিবীর এ মাথা ও মাথা ঘুরে বেড়িয়েছেন। বলতেন, ‘অবন, তুমি কী। একটু ঘুরে বেড়িয়ে দেখো চার দিক, কত দেখবার আছে।’ ছেলেবেলায় কল্পনা করতুম বড়ো হয়ে কত দেশ বিদেশ বেড়াব, ইচ্ছেমত এখানে ওখানে যাব । কিন্তু বড়ো হয়ে যখন বেরোবার বেড়াবার সেই সময়টি এল হাতে, তখন বাড়িতেই বসে রইলেম একেবারে ঘোরো বাবুট ব’নে, তোমার জন্য ঘরোয় কথার মালমসলা সংগ্রহ করতে। তবে ঘরে বসেই সারা পৃথিবীর মানুষের আর্ট আমি চর্চা করেছি, এ কথা বিশ্বাস কোরে । আর্টস্কুলের চৌকিতে বসে থাকতুম ; কত দেশ বিদেশ থেকে নানারকম ব্যাপারী আসত নানারকম জিনিস নিয়ে। গবর্মেপ্টের টাকায় আর্ট গ্যালারির জন্য জিনিস সংগ্রহ করছি, সঙ্গে সঙ্গে দেশের আর্টের সঙ্গে পরিচয়ও ঘটে যাচ্ছে। এই করে আমি চিনেছিলেম দেশের আর্ট ; তার উপরে ছিলেন আমার হ্যাভেল-গুরু । এ দেশের আর্ট বুঝতে এমন দুটি ছিল না, রোজ দু ঘণ্টা নিরিবিলি তার পাশে বসিয়ে দেশের ছবি মূর্তির সৌন্দর্য, মূল্য, তার ইতিহাস বুঝিয়ে দিতেন। হুকুম ছিল আপিসের চাপরাসিদের উপর ওই দুঘণ্টা কেউ যেন না এসে বিরক্ত করে । সদগুরু পাওয়ে, ভেদ বাতাওয়ে, জ্ঞান করে উপদেশ । তব কয়লা-ক্ষী ময়লা ছোটে বৰ আগ, করে পরবেশ । ভাবি সেই বিদেশী গুরু আমার হাভেল সাহেব আমন করে আমায় যদি না বোঝাতেন ভারতশিল্পের গুণাগুণ, তবে কয়লা ছিলেম কয়লাই হয়তো থেকে যেতেম, মনের ময়লা ঘূচত না, চোখ ফুটত না দেশের শিল্পসৌন্দর্যের দিকে । ভারতের উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম সব দিকে ছিল চর আমাদের। এক তিববতী লামা ছিল, মাঝে মাঝে আসত ; দামি দামি পাথর, চাইনিজ জেড, তিব্বতী ছবি, নানারকম ধাতুর মূর্তি আনত। সে এলেই আমরা উৎসুক R&ly