পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে রাখল, একদিন হয়তে কোনো কিছুতে ফুটে বের হবে। এই কাঠের টুকরোটি যেতে যেতে পথে পেলুম, তুলে পকেটে পুরসুম। বললে তো ঝুড়ি ঝুড়ি কাঠের টুকরো এনে দিতে পারে রথী ভাই এখখুনি। কিন্তু তাতে ংগ্রহের আনন্দ থাকে না । এমনি কত কিছু সংগ্রহ হয় আর্টিস্টের মনের ভাণ্ডারেও । এই সংগ্রহের বাতিক আমার চিরকালের । যাক, সেবার তো মুক্তে ফসকে গেল। কিন্তু কী করে জিনিস হাতে এসে পড়ে দেখো । একখানি পাল্লা, ইঞ্চিখানেক চওড়া, চৌকো পাথরটি দেখেই চোখে পড়ে, উপরে খোদাই করা মোগল আমলের। আজকাল এ জিনিস পাবে না কোথাও । বুড়ে রোগা অনন্ত শীল জহুরী, পুরোনো পাথর বিক্রি করে। ভালো কিছু হাতে এলেই নিয়ে আসে আমাদের কাছে। একদিন নিয়ে এল কয়েকটা পুরোনো টিনের কোঁটোভর নানারকমের পাথর। তার মধ্যে ওই পান্নাটি দেখেই আমার কেমন লোভ হল। তাড়াতাড়ি হাতে তুলে নিলুম। বললুম, ‘এটি কত হলে দেবে ? টাকা পঞ্চাশেক হলে চলবে তো ?’ বুড়ে জহুরী ঘাগি লোক ; চোখ দেখেই বুঝেছিল, জিনিসটি খুবই পছন্দ হয়েছে আমার । দাম বাড়াবার ইচ্ছে নাকি ? বললে, ‘ত, আমি ঠিক করে এখন বলতে পারছি নে । পরে জানাব।’ এই বলে সেদিন সেটি নিয়ে চলে গেল । মনটা আমার খারাপ হয়ে গেল, বড়ো সুন্দর পান্নাটি ছিল । লোভও হয়েছিল খুব রাখবার, নিয়ে গেল চৈাখের সামনে থেকে । তা, কী আর করব ? গেল তো গেল, বুড়োর আর দেখা নেই। মাস ছয়েক পরে তার ছেলে এল একদিন, নেড় যাথা । বললে, “বাবা চলে গেছেন। বললুম, ‘সেকি রে! এই যে সেদিনও এসেছিল পুরোনো পাথর নিয়ে । ত, তুই এখন কী করছিস ? সে বললে, ‘আমিই বাবার দোকান দেখাশুনে করি । আপনার আমার কাছ থেকে পাথর মণি মুক্তো কিনবেন না কিছু ? বরাবর তো বাবাই আপনাদের দিতেন এসে যা চাইতেন। আমার কাছে থেকেও তেমনি নেবেন দয়া করে । তাকে বললুম, “দেখ, শেষবার তোর বাবা এনেছিলেন একটি পান্না । আমার পছন্দ হয়েছিল, দামও বলেছিলুম পঞ্চাশ টাকা । কয়েকদিন বাদে সে আসবে বলে গেল, আর তো এল না । সেই পান্নাটি আমায় এনে দিতে পারিস ? পুরোনো খদের হাতে রাখবার বাসন, পরদিন দেখি ছেলেটি ঠিক খুঁজেপেতে নিয়ে এল সেই পাল্লাটি একটি فعال ۹۹: