পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉や সকাল থেকে বিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে। বসে থাকতে থাকতে মনে হল গঙ্গার রূপ—বর্ষায় গঙ্গা হয়তো ভরে উঠেছে এতক্ষণে । সেবারে এখান থেকে কলকাতায় গিয়ে একেবারে গেলুম দক্ষিণেশ্বরে গঙ্গাকে দেখতে। কিন্তু সে গঙ্গাকে যেন পেলেম না আর কোথাও । কোথায় গেল তার সেই রূপ। মনে হল কে যেন গঙ্গার অীচল কেটে সেখানে বিচ্ছিরি একটা ছিটের কাপড জুড়ে দিয়েছে। চারি দিকে খানিক তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে ফিরে এলাম বাডিতে। কিন্তু দেখেছি আমি গঙ্গার সেই রূপ — ‘বন্দ্য মাতা স্বরধুনী, পুরাণে মহিমা শুনি, পতিতপাবনী পুরাতনী। শিশুবোধক পডভূম, বডে চমৎকার বই, অমন বই আমি আর দেখি নে। এখনকার ছেলেরা পড়ে না সে বই— বুকবা কুকবা কুকবা লিজে কাঠায কুকবা কুকবা লিজে কাঠায কাঠাষ বুল পবিমাণ # বিশ কাঠায কাঠায জান। আমার যাত্রায় ছাগলের মুখে এই গান জুড়ে দিয়েছিলুম। কেমন মুন্দর কথা বল দেখিনি, যেন কুর কুরু করে ঘাস খাচ্ছে ছাগলছানা। আরো সব নানা গল্প ছিল, দাতা কর্ণের গল্প, প্রহ্নাদের গল্প, সন্দীপন মুনির পাঠশালায় কেষ্ট বলরাম পড়তে যাচ্ছেন, সন্দীপন মুনির দ্বারে কেষ্ট বলরাম, আরো কত কী। বড়ো হয়েও এই সেদিনও পডেছি আমি বইখানি মোহনলালকে দিয়ে আনিয়ে। তা, সেই স্বরধুনী গঙ্গাকে দেখেছি আমি। ছেলেবেলায় কোন্নগরের বাগানে বসে বসে দেখতুম–ছুকূল ছাপিয়ে গঙ্গা ভরে উঠেছে, কুলু কুলু ধ্বনিতে বয়ে চলেছে, সে ধ্বনি সত্যিই শুনতে পেতুম। ঘাটের কাছে বসে আছি, কানে শুনছি তার মুর—কুল কুল ঝুপ, কুল কুল ঝুপ, আর চোখে দেখছি তার শোভা—সে কী শোভা, সেই ভরা গঙ্গার বুকে ভরা পালে চলেছে জেলেনৌকো, ডিঙিনৌকা। রাত্তির বেলা সারি সারি নৌকোর নানারকম আলো পড়েছে জলে। জলের আলো ঝিলমিল করতে করতে নৌকোর আলোর সঙ্গে RR)