পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নছিকিনেবাড়ি নিয়ে গেল। পরদিন জিজ্ঞেস করলুম, কী ভাই, কেমন খেলি তপসে মাছ ? সে বললে, আর বোলো না দাদা, আমায় আচ্ছা ঠকিয়ে দিয়েছে। তপসে নয়, সব ভোলামাছ দিয়ে দিয়েছিল। ভোলামাছ দিয়ে ভুলিয়ে ঠকিয়ে দিলে। আমরা সব হেসে বাচি নে। সে রাখালি বলত, অবনদাদী, তুমি যা করলে! দিল্লিতে মেডেল পেলে, খেতাব পেলে, ছবি একে হিরিতে তোমার নাম উঠে গেল। এতেই ভায়া আমার খুশি । আমাদের ষ্টীমারযাত্রীদের সেই দলটির নাম দিয়েছিলুম ‘গঙ্গাযাত্রী ক্লাব । এই গঙ্গাযাত্রী ক্লাবের জন্য ষ্টীমার কোম্পানির আয় পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। দস্তুরমত একটি বিরাট আডিড হয়ে উঠেছিল! একবার ডাবির লটারির টিকিট কেনা হল ক্লাবের নামে । সকলে এক টাকা করে চাদ দিলুম। টাকা পেলে ক্লাবের সবাই সমান ভাগে ভুগি করে নেব । বৈকুণ্ঠবাবু প্রবীণ ব্যক্তি, তাকেই দেওয়া হল টাকাটা তুলে । তিনি ঠিকমত টিকিট কিনে যা ষা করবার সব ব্যবস্থা করলেন। ও দিকে রোজই একবার করে সবাই জিজ্ঞেস করি, বৈকুণ্ঠবাৰু, টিকিট কিনেছেন তে৷ ঠিক ? তিনি বলেন, ‘হঁ্যা সব ঠিক আছে, ভেবে না। টাকাটা পেলে ঠিকমতই ভাগাভাগি হবে।’ ত তো হবে, কিন্তু মুখে মুখে কথা সব, লেখাপড়া তে হয় নি কিছুই। অবিনাশকে বললুম, ‘অবিনাশ, এই তো ব্যাপার, কী হবে বলে তো ? অবিনাশ ছিল ঠোটকাট লোক, পরদিন বৈকুণ্ঠবাবু ষ্টীমারে আসতেই চেপে ধরলে, “বৈকুণ্ঠবাবু, আপনাকে উইল করতে হবে।’ উইল । সেকি ! কেন ? কেন নয়, আপনাকে করতেই হবে।’ বৈকুণ্ঠবাবু দারুণ ঘাবড়ে গেলেন—বুঝতে পারছেন না কিসের উইল । অবিনাশ বললে, টাকাটা পেলে শেষে যদি আপনি আমাদের না দেন বা মরে-টরে যান, টিকিট তে আপনার কাছে, তখন কী হবে ? আজই আপনাকে উইল করতে হবে।’ বৈকুণ্ঠবাৰু হেসে বললেন, ‘এই কথা ? তা বেশ তো, কাগজ কলম আনে।” তখনি কাগজ কলম জোগাড় করে বসল সবাই গোল হয়ে । কী ভাবে লেখা যায়, উকিল চাই যে। উকিল ছিলেন একজন সেখানে—তিনিও গঙ্গাযাত্রী ক্লাবের মেম্বার, ডিসপেপসিয়ায় ভুগে ভুগে কঙ্কালসার দেহ হয়েছে তার। তাকেই চেপে ধরা গেল, তিনি মুসাবিদা করলেন—উইল তৈরি হল, ‘গঙ্গাযাত্রী ক্লাবের টিকিটে যে টাকা পাওয়া যাবে তা নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ সমান ভাবে পাবে ও আমার অবর্তমানে আমার ভাগ আমার সহধর্মিণী শ্রীমতী অমুক পাবেন। ఇపెన్రి