পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাথা ঘুরে গেল। তবে তো আমাদের আর্টে এমন জিনিসও আছে, মিছে ভেবে মরছিলুম এতকাল। পুরাতন ছবিতে দেখলুম ঐশ্বর্ষের ছড়াছড়ি, ঢেলে দিয়েছে সোনা রুপো সব। কিন্তু একটি জায়গায় ফাক, তা হচ্ছে ভাব ৷ সবই দিয়েছে ঐশ্বর্ষে ভরে, কোথাও কোনো কাপণ্য নেই, কিন্তু ভাব দিতে পারে নি। মানুষ আঁকতে সবই যেন সাজিয়ে গুজিয়ে পুতুল বসিয়ে রেখেছে। আমি দেখলুম এইবারে আমার পালা। ঐশ্বর্য পেলুম, কী করে তার ব্যবহার তা জানলুম, এবারে ছবিতে ভাব দিতে হবে। বাড়ি এসে বসে গেলুম ছবি আঁকতে। আঁকলুম 'শাজাহানের মৃত্যু’। এই ছবিটি এত ভালো হয়েছে কি সাধে ? মেয়ের মৃত্যুর যত বেদন বুকে ছিল, সব ঢেলে দিয়ে সেই ছবি আঁকলুম। 'শাজাহানের মৃত্যুপ্রতীক্ষাতে যত আমার বুকের ব্যথা সব উজাড় করে ঢেলে দিলুম। যখন দিল্লির দরবার হয়, বড়ো বড়ো ও পুরাতন আর্টিস্টদের ছবির প্রদর্শনী সেখানে হবে, হাভেল সাহেব আমার এই ছবিখানা আর তাজ নির্মাণের ছবি দিলেন পাঠিয়ে দিল্লিদরবারে। আমাকে দিলে বেশ বড়ো একটা রুপোর মেডেল, ওজনে ভারী ছিল মন্দ নয়। তার পর যোগেশ কংগ্রেস ইণ্ডাষ্ট্রিয়াল একৃজিবিশনে সেই ছবি পাঠিয়ে দিল, সেখানে দিল একটা সোনার মেডেল । এইরকম করে তিন-চারটে মেডেল পেয়েছি, পরি নি কৌনোদিন । শাজাহানের ছবির কথা থাকৃ—সেই পদ্মাবতীর ছবিখানার কথা বলি । হাভেল সাহেব পদ্মাবতী ও বেতালপঞ্চবিংশতির আরো তিন-চারখানি ছবি স্কুলের প্রদর্শনীতে দিলেন। পদ্মাবতী ছবিখানার দাম কত দেওয়া যায় ? সাহেব দিলেন আশি টাকা দাম ধরে। লর্ড কার্জন এলেন, পদ্মাবতী দেখে পছন্দ হল র্তার, বললেন দাম কিছু কমিয়ে দিতে । ষাট টাকার মতন দিতে চাইলেন। আমি বলি, ‘সাহেব, দিয়ে দাও, টাকামাক চাই নে কিছু। লর্ড কার্জন চেয়েছেন ছবিখানা, সেই তো খুব দাম। সাহেব বললেন, ‘তুমি চুপ করে থাকে, যা বলবার বোঝাবার আমি বলব বোঝাব।’ এই বলে তিনি তাকে কী সব বোঝালেন, ছবিখানির দাম কমালেন না, লর্ড কার্জনকেও ছিলেন না। আমি শেষে কী করি, পদ্মাবতীর ছবিখানা ও অন্য ছবি যে দু-তিনখানা ছিল তা হাভেলকে ধরে দিয়ে বললুম, “এই নাও সাহেব, আমার গুরুদক্ষিণা, এগুলি e va సె