পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুর্তি বলে উঠল, "কী বাবু, আপনি ? আজ তো এখানে কিছু নেই, সব স্নানযাত্রায় চলে গেছে। কি-রকম থমকে গেলুম। ভিতরে যে কেউ বসে আছে একটুও টের পাই নি । যাক, বাড়ি ফিরে এলুম ভাঙা মনে। সে রাত্রে স্বপ্ন দেখি, আমি যেন সেই কুঠরিতে ঢুকে একটা মূর্তি তুলে আনব ভেবে যেই তাতে হাত দিয়েছি মূতি হাত আর ছাড়ে না। চীৎকার করছি, ‘ওমা, দেখো দেখে, হাত তুলে আনতে পারছি নে 0 দম বন্ধ হয়ে আসে স্বপ্নে। সকালে উঠে মাকে বললুম সব । মা বললেন, ‘খবরদার, কিছুতে হাত দিস নে, তবে সত্যিই হাত আটকে যাবে। সাবধান, ঠাকুরদেবতা নিয়ে কথা, আর কিছু নয়।’ কিন্তু কী বলব—এমন স্বন্দর মূতি, তাকে চুরি করারও লোভ জাগায় । তার পর আর-একদিন আর-একটা মূতি দেখলুম। নরেন্দ্র-সরোবরের ধারে অনেক মূতি আছে, পাণ্ডার ঘুরে ঘুরে দেখালে। তেমন কিছু নয়, পয়সা ফেলে ফেলে যাচ্ছি। একপাশে ছোট্ট একটা মন্দির, ভাঙা দরজা । বললুম, এটাতে কী আছে দেখাও। পাণ্ড বললে, ‘ওতে কিছু নেই বাৰু। ওটা এক বুড়ির মন্দির।’ বুড়িকে বললুম, দেখা-ন,• বুড়ি, তোর মন্দির। সে বললে, “দেখবে এসো। দরজাটি খুলে দেখাতেই একটি কালে কষ্টিপাথরের বংশীধারী মূতি, মানুযপ্রমাণ উচু, একটি হাত ভাঙা, যাকে বলে, চিকনকাল বংশীধারী। কী তার স্থঙ্ক কাজ, কী তার ভঙ্গি ! কোথাও এমন দেখি নি। বুড়িকে বলেছিলুম, ‘মন্দির গড়িয়ে দেব, নতুন মূতি তৈরি করিয়ে দেব, এটি আমায় দে।” রাজি হল না। নন্দলালদের বলেছিলুম, “যদি যাও, ভালো মূতি দেখতে চাও, সেটি দেখে এসে ’ এখনো সেই বুড়ি আছে ক্লি না, মূতি আছে কি না কে জানে। পাণ্ডারা আমল দেয় না। বোধ হয় ভাঙা বলে ফেলে দিয়েছিল, বুড়ি তাকে পুজো করত। প্রাণ ঠাণ্ডা হয়ে গেল, কিন্তু ঘরে আনতে পারলেম না এই দুঃখ রইল। তোমরা ‘ভারতশিল্প’ ‘ভারতশিল্প কর, দরদ কি আছে কারো ? ন৷ পুরীর রাজার, না ম্যানেজারের, না পাণ্ডাদের, দরদ কারে নেই। প্রমাণ झेि । ৩২৩