পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরাতন লেখা খুব ছেলেবেলার থিয়েটার আমার মনে পড়ে খুব ছেলেবেলায় অরুদাদা, ছোড়দাদা আর আমরা তিনজন হাবা খেলা করিতাম। তার আগের কথা আমার কিছু মনে পড়ে না। আমাদের প্রধান খেলা ছিল থিয়েটার। অরুদাদা আর ছোড়দাদা থিয়েটার করিতেন আর আমরা সব দেখিতাম। আমাদের থিয়েটার প্রায়ই যোঝায়ুঝি মারামারি লইয়া— কারণ বড়ো পিসের একটা পুরোনে ক্রিব, ছিল সেইটে আমরা দখল করিয়াছিলাম। অতএব ক্রিব, লইয়া থিয়েটার করিতে গেলে যোঝাযুকি মারামারি ভিন্ন আর কিরকম থিয়েটার হইতে পারে? আমাদের বাড়ির উত্তরের বড়ে ঘর আমাদের থিয়েটারের ঘর ছিল। সেই ঘরে একখানা সেকেলে প্রকাণ্ড কোঁচ ছিল—সেইটিই আমাদের স্টেজ হইত। এই স্টেজ অতি চমৎকার। কোঁচের পশ্চাতে লুকাইলেই ‘সিন পড়িল এবং কোঁচের উপর উঠিলেই ‘সিন’ খুলিল। এই থিয়েটারের কথায় একটা বড়ে মজার কথা মনে পড়িতেছে। একদিন থিয়েটার হইতে হইতে অরুদাদা ছোড়দাদাকে এমন লাথি কিল চাপড় ইত্যাদি মারিলেন যে বলা যায় না। কিন্তু ছোড়দাদাকে সকল সহ করিতে হইল, কারণ ও থিয়েটারে মারামারি, ওতে কাদিলে কিংবা রাগিলে চলিবে কেন— ও তো আর সত্য সত্য মার নয় । আর-একদিন মহা বিপদ– দাদা রাজা সাজিবেন কিন্তু রাজার তো কিছু গহন পর চাই । কোথা থেকে এক ‘রিং এল । সেই রিং ঠেলেঠলে দাদার আঙলে পরানো হল— এই আর কি, তারপর আর রিং খোলে না। মহা বিপদ– সাবান দাও, এ দাঁও ও দাও কিছুতেই কিছু না । মায়েদের কাছে খবর গেল– রিং কাটিয়া তবে রিং খুলিতে হইল। এই তো গেল থিয়েটারের ব্যাপার। সেই অবধি বোধ হয় থিয়েটার বন্ধ হইয় গেল । আমাদের আড়ি-ভাবের কর্তা আমাদের মধ্যে আগে আগে একজন কুরিয়া আড়ি-ভাবের কর্তা থাকিতেন। • ওই লোকের ক্ষমতা অসীম । ইনি আড়ি বলিলে আড়ি, ভাব বলিলে ভাব । о8 е