পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দাদার হল-এ এক টেবিলের উপর বসিয়া ছিলেন, দূর হইতে আমার হাতেকেষ্ট ঠাকুর দেখিয়াই তো অবাক। অমনি পরামর্শ হইল—কেষ্ট ঠাকুর ওর হাতছাড়া করিতে হইবে। কিন্তু কেষ্ট ঠাকুর কেষ্ট না পাইলে আমার হাতছাড়া হয় না দেখিয়া কষ্ট ঠাকুরকে কেষ্ট পাওয়ানোই স্থির হইল । আমি কাছে গেলে আমাকে সকলে স্থপরামর্শ দিলেন-তুই ঠাকুরটা মাটিতে আছড়ে ভেঙে ফেল, দেখ ওর থেকে কেমন ভালো জিনিস বেরুবে । আমি সেই কথা শুনিলাম। মাছি মাকড়সার জালে পড়িলে আর উদ্ধার নাই। কেষ্ট ঠাকুরকে সজোরে এক আছাড় । মাটির কেষ্ট মাটিতে মিশাইল, আমারও খেলার স্বপ্ন মাটি-চাপা পড়িল—কোথায় বা ঠাকুর, কোথায় বা জিনিস ? সব ফক্কা । অম্বর আমাদের বাড়ির মেদিপাতার চক্করের মাঝখানে তেঁতুলগাছের মতে কীএকটা গাছ ছিল । সেই গাছের তলার ছোড়দাদা একদিন কোথা হইতে একটা মাটির অমর আনিয়া ফেলিলেন । সেই অস্থরটা দেখিয়া তখন যে কী ভয় হইত তাহ বলিতে পারি না। রাত্রিতে বারান্দা দিয়া শুইতে যাইবার সময় যখন মাটির অস্থর দেখিতে পাইতাম, তখন এমনি ভয় হইত। মনে হইত যেন সত্যসত্য একটা জীবন্ত অস্থর গাছের তলায় হাত-পা ছড়াইয়া বসিয়া আছে। এই মাটির অস্কর আমাদের অনেকদিন অবধি ভয় দেখাইয়াছিল। ভূতের ঘর আমাদের বাড়িতে এক ভূতের ঘর ছিল। এই ঘরে এক জীবন্ত ভূত বাস করিত। এই ঘর তখন ভাণ্ডার ঘর ছিল । এই ঘরের একটি গরাদে দেওয়া জানলা ছিল। সেখানে সন্ধ্যার সময় গেলে আমরা সেই জানলার ভিতর দিয়া গোফসমেত একটা কালো মুখ দেখিতে পাইতাম। কেবল সেই কালে মুখ—আর কিছু নয়। ঘরের ভিতরটা ঘোর অন্ধকার—কিছু দেখা যায় না। এই মুখ আমাদের কতরকম ভয় দেখাইত। তখন কে জানিত এই মুখ আমাদের ক্রমান কালী ভাণ্ডারীর। VEGG