পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

िि ওহে সম্পাদক, তুমি বুধবারে লেখা চাও কিন্তু লেখে কে ; হয়ত সে ইস্কুল পালিয়ে শীতে কম্বল মুড়ি দিয়ে দিবানিদ্রা দিচ্ছে। বেলা আড়াই প্রহর, চোখ এতকাল যে ছবিগুলো দেখেও দেখে নি সেইগুলো খুঁটিয়ে দেখছে— সবে বেল। আড়াই প্রহর কিন্তু এর মধ্যে রোদের তেজে একটুখানি ডালিম ফুলের রংএর খবর এসে গেছে, বাইরে বাগানে পাহাড়ি ঝাউ মন্দিরের চুড়ে থেকে খসিয়ে এনে বিশ্বভারতী কলাভবনের কোণে কিংবা আর্টসোসাইটির হলের মাঝে অথবা যাদুঘরের কাচের কফিনে ধর একটি যক্ষিণী মূর্তির মতো পূব দিকের গায়ে হেলান দিয়ে শুকনে মুখে যেন কী ভাবছে! একটি ফুলের লতা ক্লোন দিক দিয়ে চুপি চুপি এসে বুড়ো কাঠাল গাছটার মাথা ফুলের আবীরে লালে লাল করে দিয়েছে। এরি গায়ে পুরোনো বাড়ি ভাঙা আলসের ছায়ায় দুটে নীল পায়রা ঘাড় নেড়ে বকবিকি মুরু করে দিয়েছে, মাড়োয়ারিদের বাড়ির টিনের ছাদে চাকা চাকা পাপড় শুকোচ্ছে হঠাৎ একটা বাতাস এসে টুকরে। কাগজের মতো পাপড়গুলোকে উড়িয়ে দিয়ে পালালো। খন্‌ খন করে পিতলের কঁাসিতে ঘা দিতে দিতে রাসন হেঁকে একটা লোক গলি পার হয়ে গেল, টুং টুং টুং বেলা তিনটের ঘড়িটা তার সাড়া দিলে। ‘ক’ বলে একটা কাক বারাদার রেলিংটায় উড়ে বসে বানিস করা পাখনাগুলোর দিকে ফিরে ফিরে দেখতে লাগল। বাগানের বাধী রাস্ত দু পাশে দুটো হাত ছড়িয়ে চিৎ হয়ে পড়ে আছে, রোদ আর ছায়া তার গায়ে নানা রকম ডোরা একে দিয়েছে, গোটাকতক চড়াই পাখি তারি ধারে শুকনো মাটিতে, গাৰু খুঁড়ে নিজেরাই মার্বেল হয়ে বাজি খেলতে লেগে গেছে, গোল বাগানের ঠিক মাঝখানটিতে ফোয়ারার জল কালো কাচের একটা পদ্মকাটা পান বাটার মতো পড়ে রয়েছে। কালে কালে রংজলা এখানে ওখানে পুরোনো আতরের তেলে কালি পড়া সাবেক কালের সবুজ শালের মতো ঘাস-জমি তার উপর একটুকরো জানা আর ছেড়া চিঠির একটা কোণ, হীরের মতো জল জল করছে—মরুভূমির একটা কঁাটাগাছ, তারি বুকের ফাকে ফঁাকে মাকড়সার জাল ঘন কুয়াশার মতো বিছিয়ে রয়েছে। একটা \s8ፃ