পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিকে পাঁচটা ধাপের মেটে সিড়ি ধরে চলল রামলাল। এই সিড়ির গায়েই পালকি নামবার ঘর ; সেখানে ঘরজোড় দোতলা পর্যন্ত একটা মেটে সিড়ি— গজগিরি পাচিল আর উচু উচু ধাপগুলো তার—সেটা পেরিয়ে একটা সরু গলি, তার জানালা নেই, দরজা নেই, খালি পাচিল আর ছোটো ছোটো ফুটে করা কাঠের বেড়া দিয়ে ঘেরা জায়গাটা অন্ধকারে মোড় । এই সরু গলিট পেরিয়ে পড়লেম একটা খোলা ছাদের একধারে একটা আরো সরু বারান্দায়। সেখানে সারি সারি মাটির উকুন। একটা মোটাসোটা দাসী দেখি মস্ত লোহার কড়া আগুনের উপর চাপিয়ে বসে আছে ইট একখানা পেতে। সে আমার দিকে চেয়ে দেখার আগেই সামনের চারপাচটা ধাপ নেমে গিয়ে পড়েছি একটা ছোটো জানাল আঁট ঘরে। সেখানে দেখি অন্ধকার— একটা মস্ত র্যাত নিয়ে ব’সে এক বুড়ি—শাদা কাপড় পরা— আমাকে দেখেই সে একবার র্যাতাটা ঘুরিয়ে দিলে। ঘঘর শব্দে সমস্ত ঘরখানা পায়ের তলায় কেঁপে উঠল। রামলাল আর সেখান থেকে নড়তেই চায় না। ভাবছি ছোটোপিসি বলেছেন গঙ্গাজলের কথা, রামলাল কি এত নেমকহারাম হবে যে হুকুম না মেনে যাতাবুড়িকে দিয়ে দেবে আমাকে, আর চাল ভালের সঙ্গে গুড়িয়ে ধুলো হয়ে যাব যখন, তখন গিয়ে রামলাল ছোটােপিসিকে মিছে কথা বলবে যে আমি ইচ্ছে করে যাতা ঘোরাতে গিয়ে সর্বনাশ ঘটিয়েছি। রামলাল যখন বুড়ির কাছ থেকে একমুঠো সোনামুগ খুঁটে বেঁধে নিয়ে ঠাকুরবাড়ির দিকে অগ্রসর হল তখন রামলালের সঙ্গ নিতে একটুও দেরি করলেম না । যাতাঘরটা ছাড়িয়েই রান্নাবাড়ির বারান্দা— সেখানে মাছভাজার গন্ধ পেয়ে মনে হল এ যাত্র বেঁচে গেছি। রায়াবাড়ির উঠোনের পূব গায়ে সরু মেটে সিড়ি বেয়ে উঠে যেতে হয় ঠাকুরবাড়ি– কতকালের সিড়ি, ইট খসে খসে ধাপগুলো তার ফোগলা হয়ে গেছে। এই সিড়ির মাঝামাঝি উঠে দেওয়ালের গায়ে চোঁকে একটা দরজা ফল করে খুলে রামলাল বললে— এটা কি জানো ? চোরকুটুরি, পেন্ধি থাকে , এখানে ৷” - আর বলতে হল না, সোজা আমি উঠে চললেম সিড়ি যেখানে নিয়ে যায় .ষাকৃ ড়েবে। খানিক পরে রামলালের গলা পেলেম—জুতো খুলে দাড়াও, Vog 3