বড়ো হবে। আর আমার মুখে জবাব নেই। এর পর কী জবাব দেব রামলাল তো শিখিয়ে দেয় নি। কাজেই বিনা বাক্যব্যয়ে তাই নিলুম। ছোটো কর্তাকে প্রণামের পালা শেষ করে ঢুকতে হত অন্দরে। সেখানে সব আগে দিদিমাকে ( রমানাথ ঠাকুরের স্ত্রী) প্রণাম করেই সন্দেশ পেতুম । দিদিমা আবার নতুন করে নেমস্তন্ন দিতেন— ‘রামলাল, ছেলেদের যাত্রা দেখাতে আনিস।” নবমীর দিন যাত্র বসত কয়লাহাটায়। ওই দিন সন্ধে থেকে সেখানে হাজির ৷ খাওয়া-দাওয়া সব সেখানেই । চাকররা আমাদের খাওয়া-দাওয়৷ সারিয়ে নিয়ে যেত কর্তার একটি ঘরে— সে ঘরে মন্ত একখান সেকেলে খাট ছিল । সে যেন বিক্রমাদিত্যের বত্রিশ সিংহাসনের চেয়েও জমকালে । সেটা এত উচু যে সিড়ি বেয়ে তাতে উঠতে হত। সেইখানে নিয়ে গিয়ে চাকররা আমাদের শুইয়ে দিত। আর বলে যেত—‘এখন ঘুমোও, যাত্র জমলে নিয়ুে যাব । চাকরদের ভয়ে তখন চুপচাপ লক্ষ্মীছেলে হয়ে শুয়ে পড়তুম। মটক মেরে ঘুমোবার ভান করতুম। তারপর চাকররা চলে গেলে সেই খাটের ওপর আমাদের বাড়ির ছেলেরা আর সে-বাড়ির ছেলের সবাই মিলে হৈ-হল্লা, গল্প-গুজব খেলা শুরু করে দিতুম । ঢোল বাধা হচ্ছে, গিজত গিজুম শব্দ শুনতে পাচ্ছি। খাওয়া-দাওয়া ভোজের এটা নিয়ে আয় ওটা নিয়ে আয়' ‘দই আন সন্দেশ আন এই-ধ্রুব কানে আসত। এই করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়তুম জানি নে। এক সময়ে রামলাল এসে বলত, ‘ওঠে । ওঠে। যাত্রা জমেছে।’ ঘুমে তখনো চোখ জড়িয়ে থাকত। চাকররা কোলে করে নিয়ে গিয়ে আমাদের তখন যাত্রার আসরে বসিয়ে দিয়ে আসত। যাত্রার আসরে দেখি সব গুরুজনর সামনে বসেছেন । বড়ে বড়ে সব সটকা পড়েছে। আসর ঘিরে পাড়া-পড়শী চাকর দাসী চেনা অচেনা মেলাই লোক জড়ো হয়েছে। দোতলার বারীন্দুীয় খড়খড়ির পিছনে মেয়েরা, বৈঠকখানার বারান্দায় ছোকরা বাবুরা। আর আমাদের জায়গা ছোটোকর্তার বসবার পিছনে এক দিকে । তিনি ছোটো ছোটাে ছেলেমেয়েদের নিয়ে সেখানে বসতেন। ছোটােদের বড়ো ভালবাসতেন তিনি। .আরতির সময়ও আমরা তার চারপাশে সামনে পিছনে হাতজোড় করে সারি দিয়ে দাড়াতুম। যাত্রা তখন জমেছে। কতু রকম নাটকই-না তখন হত। বউ মাস্টার’ না কী একটা যাত্রার দলের নাম আমার মনে আছে। চারধারে গেলাস-বাতি Všeo