পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগদিন্দ্রনাথের স্মরণে কোঁটার ভিতরে কোঁটা তার ভিতরে প্রাণ-ভোমরা লুকিয়ে লুকিয়ে নানা দিক থেকে নানা স্মৃতি সংগ্রহ করে রাখছে ! মনের মাতুষদের স্মৃতি মনোমতো কত কী ছোটাে বড়ো নতুন পুরোনোর স্মৃতি নিয়ে উলটে পালটে খেলা মানুষের। অতুল ঐশ্বর্য দিয়ে ভর্তি করা স্মৃতির এই যে গোপন গৃহ এর দ্বারে সেপাই-সামীর পাহার নেই। কিন্তু মন্ত্র দিয়ে বন্ধ করা এর প্রবেশপথ, ভিতর থেকে খোলে হুয়ার এ ঘরের নিজের মনের হুকুমে, বাইরে থেকে খোলে মনের মানুষ যদি যায় তবে । মনোমতো না হলেও স্মরণ থাকে অনেক জিনিস — যেমন মনে থাকে ইতিহাসের তারিখ, টেক্স্টবুকের পাত, সভায় আসার দিন ও ক্ষণ এবং নিত্যপরিচয়ের দ্বারায় অভ্যস্ত ও মুখস্থ হয়ে গেল যে সব স্থান কাল পাত্র তারাও । কিন্তু মনোমতো যারা কেবল তাদেরই ধরা থাকে স্মৃতি আমাদের মনে । মনোমতে সে একটিবার এল এবং চকিতে, চলে গেল কিন্তু সেই একটি মুহূর্ত স্মৃতির মধ্যে রইল ধরা অপার রসমূর্তিতে। মিটিংএর দিন ক্ষণ মনে থাকে বটে, দরদ দিয়ে মন তো তীরে ধরে রাখে না— মিটিং শেষ হলে মিটে গেল ভাবনা কিন্তু ভেবে দেখে সেই কোন একটা শুভলগ্নের স্মৃতি বুকের বাসা থেকে তাকে বিদায় সে দিতেই চায় না মন— নিত্য নতুন ফুলের মালা দিয়ে তাকে বেঁধেই রাখে আপনার সঙ্গে ৷ যথার্থ ভাবে যাকে পাই তায়ই স্মৃতিকে রাখি মনে । দরদ দিয়ে বাজল তবেই সে ফুটল মনের মধ্যে স্মৃতি রেখে । দরদের ঘেরে ধরা থাকে স্মৃতি, বিরহের ছন্দে বাধা নীল নবমল্লিকা সে অন্ধকারের অপরূপ নিমিতি সে স্মৃতি । চোখে দেখার পালা যেমনি সাঙ্গ হল অমনি স্মৃতি ধরে দেখা শুরু হয়ে গেল। দর্শনের বাইরে গেলেই যে গেল একেবারেই তা তো নয়, মননের মধ্যে স্মৃতি যে এসে ধরা দিলে তৎক্ষণাৎ— তিল মাত্র দেরি সইল না । দিনের আলো নিভতে না নিভতে চাদ উঠল অন্ধকারের ঘেরে ধরা মনোমোহন রূপ। মনের কোণে ধরা অফুরন্ত বিরহের দীপশিখা তারি আলোতে নিত্য নূতন ভাবে মিলনের এবং বিরহের দুই ছন্দ একখানি করে গাথা হয় স্মৃতি-হার যা মনকে সে উন্মনা করে আনমনা করে অনন্যয়ন করে। কাটার আগায় ফুল হল স্মৃতি, \కిూ