পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৪০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরলোকগত ঈ বী হ্যাভেল সে তখনকার কথা যখন এক দিকে বড়ো বড়ো নামজাদা প্রত্নতাত্ত্বিকরী ( archaeologist ) আমাদের প্রাচীন মন্দির-মঠাদির বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছেন, আর-এক দিকে আর্ট স্কুলে প্রাচীন ইউরোপীয় চিত্রকলার মাঝারিগোছের সন্ত নমুনা থেকে নকল নিয়ে নিয়ে আমাদের দেশে শিল্পশিক্ষার্থীদের ক’রে তোলা হচ্ছে ইউরোপীয় পদ্ধতিতে অয়েল পেইণ্টার, ওয়াটার কালার পেইণ্টার— নকল র্যাফেল, টিশিয়ান হয়ে উঠবার অভিনয় চলেছে, যেন বাঙালি ছেলে ক্রটাস সেজে মুখস্থ-করা স্পীচ জাউড়ে যাচ্ছে আর ভাবছে নিজেকে সত্যই রোমান সেনেটর একজন। আমরা যে কেবলই আর্টিস্ট হবার অভিনয় করে চলেছি সেটা ভ্রমেও মনে হত না কারো। শুধু প্রত্নতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা যে আর্টের সৌন্দর্য বোঝার পক্ষে একেবারেই কাজে আসে না এটা বুঝলেম আমরা প্রথম হাভেল ( Havell) সাহেবের লেখা থেকে— এ থুেন কতকাল আমাদের ভাস্কর্য-শিল্পের বহিরঙ্গীণ অংশের দৈর্ঘ্য প্রস্থ বয়েস ইত্যাদির হিসেব ধরা হচ্ছিল আমাদের আগে প্রত্নতত্ত্ববিদগণের দ্বারা— ঠিক যে তাবে ঘোড়ার দালাল ঘোড়ার দাত- ল্যাজের দৈর্ঘ্য কাঠামোর লম্বাই চাওড়াই দিয়ে ঘোড়ার সৌন্দর্য বর্ণনা করে ঘ্রেই ভাবে কাজ হচ্ছিল। কিন্তু হাভেল সাহেব তার লেখায় একাধারে প্রত্নতত্ত্ব, সৌন্দর্যতত্ত্ব, ভারতীয় শিল্পের নিগুঢ় রস পরিবেশন করলেন আমাদের। সঙ্গে সঙ্গে শিল্পশিক্ষা-পদ্ধতিও তিনি দেশী প্রথায় এদেশের ছাত্রগণের উপযোগী করে তোলবার চেষ্টায় রইলেন। খাচী থেকে পাখিকে টেনে বার করে বনস্পতির ডালে তাকে বসিয়ে দিতে গেলে সে যেমন মানুষটাকেই কামড় দিতে থাকে তেমনি ঘটনা ঘূটল এ দেশীয় শিল্পী ও হাভেল সাহেবের মধ্যে— আর্ট-স্কুলের প্রথম শিক্ষা-সংস্কার কালে। তখন আমাদের কোনো শিক্ষাসদনে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্ট শিক্ষার স্থান ছিল না— আজকাল নৃত্যকলা শিক্ষা নিয়ে যে হৈ-চৈ বেধেছে তার চেয়ে অধিক আপত্তি উঠেছিল তখনকার কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের মধ্যে শিক্ষাগারগুলোর মধ্যে ড্রয়িং শিক্ষার প্রথম প্রচলন ব্যাপার নিয়ে। অক্লাস্ত চেষ্টার ফলে সে-বিষয়ে இது