পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হতে পারে। এইভাবে যদি দেখতে শেখ তবেই সব সহজ হয় যাবে। এই ষে রবিকাকা আজকাল ছোটো ছোটো গল্প লিখছেন, এ হচ্ছে ওই তেতলার অন্তরমহলের ব্যাপার । উনি নিজেই বলেছেন সেদিন, এখন আমি খ্যাতিঅখ্যাতির বাইরে। তাই উনি অন্দরমহলে বসে আপন শিশুর সঙ্গে খেলা করছেন, তাকে আদর করে সাজিয়ে তুলছেন। সেখানে একটি মাটির প্রদীপ মিটমিটু করে জলছে, দুটি রূপকথা— এ সবাই বুঝতে পারে না । আমার এই-যে এখনকার পুত্বল গড়, এও হচ্ছে ওই অন্দরমহলেরই ব্যাপার। আমি তাই এক-এক সময়ে ভাবি, আগে যে যত্ব নিয়ে ছবি অশকতুম এখন আমি সেই যত্ব নিয়েই পুত্বল গড়ছি, সাজাচ্ছি, তাকে বসাচ্ছি কত সাবধানে। নন্দলালকে জিজ্ঞেস করলুম, এ কি আমি ঠিক করছি। সেদিন আমার পুরোনে চাকরটা এসে বললে, বাবু, আপনি এ-সব ফেলে দিন। দিনরাত কাঠকুটো নিয়ে কী যে করেন, সবাই বলে আপনার ভীমরতি হয়েছে। আমি বললুম, ভীমরতি নয়, বাহাত্তরে বলতে পারিস, ছুদিন বাদে তো তাই হব। তাকে বোঝালুম, দেখ, ছেলেবেলায় যখন প্রথম মায়ের কোলে এসেছিলুম তখন এই ইট কাঠ ঢেল নিয়েই খেলেছি, আবার ওই মায়ের কোলেই শেষে ফিরে যাবার বয়স হয়েছে কিনা, তাই আবার সেই ইট কাঠ টেলা নিয়েই খেলা করছি। নন্দলাল বললে, তা নয়, আপনি এখন দুরবীনের উন্টে দিক দিয়ে পৃথিবী দেখছেন। কথাটা আমিই একদিন ওকে বলেছিলুম, সবাই দুরবীনের সোজা দিক দিয়ে দেখে, কিন্তু উণ্টে পিঠ দিয়ে দেখো দিকিনি, কেমন মজার খুদে খুদে সব দেখায়। ছেলেবেলায় আমি আর-এক কাও করতুম– হাতের উপর ভর দিয়ে মাথা নীচের দিকে পা দুটো উপরের দিকে তুলে পায়ের নীচে দিয়ে গাছপালা দেখতুম, বেড়ে মজা লাগত। নন্দলাল তাই বললে, আপনিও এখন দুরবীনের উণ্টে দিক দিয়েই সব-কিছু দেখছেন। এই দুরবীনের উণ্টে পিঠ দিয়ে দেখা, এও একটা শখ। २ সেকালে শখ বলে একটা জিনিস ছিল। সবার ভিতরে শখ ছিল, সবাই ছিল শোঁখিন। একালে শৌখিন হতে কেউ জানে না, জানবে কোখেকে। ዓ¢