পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অতীত। বিন্দির পিসী দাড়াইয়া ছিল, সে কহিল, দাও বাবা, দাওএকটু পায়ের ধূলো । রসিক অগ্রসর হইয়া আসিল । জীবনে যে স্ত্রীকে সে ভালবাসা দেয় নাই, অশন-বসন দেয় নাই, কোন খোঁজখবর করে নাই, মরণকালে তাহাকে সে শুধু একটু পায়ের ধূলা দিতে গিয়া কঁাদিয়া ফেলিল । রাখালের মা বলিল, এমন সতীলক্ষ্মী বামুন-কায়েতের ঘরে না জন্মে ও আমাদের দুলের ঘরে জন্মালো কেন ! এইবার ওর একটু গতি করে দাও বাবা - ক্যাঙলার হাতের আগুনের লোভে ও যেন প্রাণটা দিলে । অভাগীর অভাগ্যের দেবতা অগোচরে বসিয়া কি ভাবিলেন জানি না, কিন্তু ছেলেমানুষ কাঙালীর বুকে গিয়া এ কথা যেন তীরের মত বিধিল । সেদিন দিনের বেলাটা কাটিল, প্রথম রাত্রিটাও কাটিল, কিন্তু প্রভাতের জন্য কাঙালীর মা আর অপেক্ষা করিতে পারিল না। কি জানি, এত ছোটজাতের জন্যও স্বৰ্গে রথের ব্যবস্থা আছে কি না, কিংবা অন্ধকারে পায়ে হঁটিয়াই তাহদের রওনা হইতে হয় –কিন্তু এটা বুঝ গেল, রাত্রি শেষ না হইতেই এ দুনিয়া সে ত্যাগ করিয়া গেছে । কুটীর-প্রাঙ্গণে একটা বেলগাছি, একটা কুড়ুল চাহিয়া আনিয়া রসিক তাহাতে ঘা দিয়াছে কি দেয় নাই, জমিদারের দরোয়ান কোথা হইতে ছুটিয়া আসিয়া তাহার গালে সশব্দে একটা চড় কষাইয়া দিল ; কুডুল কাড়িয়া লইয়া কহিল, শালা, একি এতার বাপের গাছ আছে যে কাটতে লেগেছিস ? রসিক গালে হাত বুলাইতে লাগিল, কাঙালী কঁাদ-কঁাদ হইয়া বলিল, বাঃ, এ যে আমার মায়ের হাতে পোতা গাছ, দারোয়ানজী { বাবাকে খামোক তুমি মারলে কেন ? হিন্দুস্থানী দরোয়ান তাহাকেও একটা অশ্রাব্য গালি দিয়া মারিতে গেল, কিন্তু সে নাকি তাহার জননীর মৃতদেহ স্পর্শ করিয়া বসিয়াছিল, তাই অশোচের ভয়ে তাহার গায় হাত দিল না । কঁকাহঁকিতে একটা a st