পাতা:অভাগীর স্বর্গ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না। বিপিনের স্ত্রী হাতের চুড়ি বেচিয়া আদালতে নালিশ করিল,- কিন্তু তাহাতে শুধু গহনাটাই গেল, আর কিছু হইল না। বিপিনের পিসীমা-সম্পৰ্কীয় একজন শুভানুধ্যায়িনী এই বিপদে হরিলক্ষ্মীর কাছে গিয়া পড়িতে বিপিনের স্ত্রীকে পরামর্শ দিয়াছিলেন : তাহাতে সে নাকি জবাব দিয়েছিল, বাঘের কাছে হাত জোড় করে দাড়িয়ে আর লাভ কি পিসীমা ? প্রাণ যা যাবার তা যাবে, কেবল অপমানটাই উপরি পাওনা হবে । এই কথা হরিলক্ষ্মীর কানে আসিয়া পৌছলে সে চুপ করিয়া রহিল, কিন্তু একটা উত্তর দেবার চেষ্টা পর্যন্ত করিল না । পশ্চিম হইতে ফিরিয়া অবধি শরীর তাহার কোনদিনই সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল না, এই ঘটনার মাস-খানেকের মধ্যে সে আবার জ্বরে পড়িল । কিছুকাল গ্রামেই চিকিৎসা চলিল। কিন্তু ফল যখন হইল না, তখন ডাক্তারের উপদেশমত পুনরায় তাহাকে বিদেশীযাত্রাব জন্য প্রস্থ ত হইতে शंशेळ । নানাবিধ কাজের ৩াড়ায় এবার শিবচরণ সঙ্গে যাইতে পারিল না, দেশেই রহিল । যাবার সময় সে স্বামীকে একটা কথা বলিবার জন্য মনে মনে ছটফট করিতে লাগিল, কিন্তু মুখ ফুটিয়া কোনমতেই সে এই লোকটির সম্মুখে সে কথা উচ্চারণ করিতে পারিল না। তাহার কেবলই মনে হইতে লাগিল, এ অনুরোধ বৃথা, ইহার অর্থ সে বুঝিবে না । is হরিলক্ষ্মীর রোগাগ্রস্ত দেহ সম্পূর্ণ নিরাময় হইতে এবার কিছু দীর্ঘ সময় লাগিল। প্রায় বৎসরাধিক কাল পরে সে বেলপুরে ফিরিয়া আসিল । শুধু কেবল জমিদারের আদরের পত্নী বলিয়াই নয়, সে এতবড় সংসারের গৃহিণী। পাড়ার মেয়েরা দল বঁাধিয়া দেখিতে আসিল, যে সম্বন্ধে বড়, সে আশীবাদ করিল, যে ছোট সে প্রণাম করিয়া পায়ের 巴>