পাতা:অভিযাত্রিক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अख्रिथांड्रिक বাড়িটা । নিচে বঁাশবনের ছায়ায় ঝরনার ধারে অমরা রান্নাবাল্প কয়লাম, গান গাইলাম, কবিতা আবৃত্তি করলাম, কাঠ কুড়িয়ে আনলাম রান্নার জন্তে, জল তুললাম। গ্রাম থেকে টিপ্রাইদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা দুয়ে দাডিয়ে গম্ভীর মুখে আমাদের কাণ্ড দেখতে লাগলো । বেলা যখন প্রায় তিনটে বাজে, তখন হঠাৎ “বিভূতিবাবু! বিভূতিবাবু!” বলে কে যেন ডাকচে-দূর থেকে শুনতে পেলুম। আমরা সবাই উৎকর্ণ হয়ে রইলাম। বাশবনের ওপারের পথে টিলার পাশে দূর থেকে কে যেন ডাকচে ঠিকই । আমরা প্রত্যুত্তরে খুব জোরে হাক দিলাম, এই যে এখানে । আমাদেব একজন রাস্তার দিকে ছুটে গেল । অল্পক্ষিণ পরেই দেখি আমার গেস্ট হাউসের বন্ধুটি লম্বা লম্বা পা ফেলে। বঁাশবন ভেঙে হাসিমুখে আমাদের দিকেই আসচেন । -এলুম। আপনাদের কাছে, না এসে কি পারি ? কাজটা শেষ হয়ে গেল তাই বলি যাই ; তারপর, কতদূর হ’ল ? অপ্রত্যাশিতভাবে তাকে পেয়ে আমরা তো অত্যন্ত খুশি । আমার সত্যিই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল ভদ্রলোক না। আসতে । তিনি বললেন, -এসব জায়গা আমার পরিচিত, পাযে হেঁটে কতবার এসোচি । আপনার যখন বললেন কুঞ্জবন প্যালেসের উত্তরের পাহাড়ে যাবেন, তখনই ভেবেচি এই জায়গা। একটু চা থা ওয়ান তো আগে, উঃ হঁাপিয়ে গিয়েচি আমবা তাকে পেয়ে যেমন খুশি, তিনিও আমাদের পেয়ে তেমনই খুশি । একটু পরে আমরা সবাই মিলে গান আরম্ভ করলুম।--তার মধ্যে দুজন রান্না করতে লাগলো । আমার সঙ্গীটি তার বয়স ভুলে আমাদের সঙ্গে গানে আমোদে এমন করে যোগ দিলেন যে সেদিন বুঝলুম তার মনের তারুণ্য, যা জীবনের আর্থিক অসাফল্যে বিন্দুমাত্র স্নান হয়নি।