পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরক্ষণীয়া Sኳ” হয় স্বামীকে ঠিক সময়ে আভুক্তই যাইতে হইবে । দুটার একটা অপরিহার্য। ছোটবোঁ ফিরিয়া আসিয়া দুর্গামণির দরজার সম্মুখে দাড়াইয়া তীক্ষকণ্ঠে কহিল, যাবেই ত ! কিন্তু এমন খোলোনি করে না গেলেই কি হত না মেজদি ? এই অভাবনীয় আক্রমণে দুর্গামণি অবাক হইয়া গেলেন । ছোটবেী কহিল, আমরা কেউ জানিনে, তোমরা সকালেই যাবে। তিনি গেছেন। গঙ্গা নাইতে ; আমি ত এই উঠচি ৷ টাইমের ভাত কি করে দিই বল দেখি ? প্রাতঃপোন্নাম হই মাসিমারা, বলিয়া অতুল বারান্দায় আসিয়া দাড়াইল । ছোটবেী ফিরিয়া আসিয়া কহিল, তুমি হঠাৎ যে অতুল ? অতুল কলিকাতায় মেসে থাকে। সেখানে চিঠি পাইয়া দুটাছুটি করিয়া এইমাত্র আসিয়া জুটিয়াছে-এখনও বাড়ি যায় নাই। কহিল, মেজমাসিমা হরিপালে গঙ্গাযাত্রা করবেন, আর শেষ দেখাটা। একবার দেখতে আসিব না ? হরিপাল ! অর্থাৎ ম্যালেরিয়ার ডিপো ! তা এই আশ্বিনের শুরুতেই এমন সুবুদ্ধিটা তোমাকে কে দিলে বল দেখি মেজমা সিমা ? বাঃ-বাধা ছাদা একেবারে কমপ্লিট যে ! বলিয়া সে সহস্যে ঘরের মধ্যে দৃষ্টিনিক্ষেপ করিতেই একপ্রান্ত হইতে একজোড়া জলে-ভরা আরক্ত চক্ষুর টেলিগ্রাম পাইয়া স্তব্ধ হইয়া থামিল। ছোটবেী প্রশ্ন করিল, তুমি কি করে খবর পেলে অতুল ? আমি ? বাঃ-, বলিয়া অতুল তাহার কৈফিয়ত শেষ করিল। অকস্মাৎ প্রাঙ্গণের কোন একটা নির্দিষ্ট স্থান হইতে স্বর্ণমঞ্জরীর কণ্ঠস্বর শব্দভেদী বাণের মত আসিয়া প্রত্যেকের কানে বিধিল । অর্থাৎ, তিনি গঙ্গাস্নানে শান্ত-শুচি হইয়া বাটীতে পা দিয়াই বির মুখে কয়লার উনুনের খবর পাইয়াছিলেন । সুতরাং মেজাজায়ের সদ্যবৈধব্যের যথার্থ হেতুটা মুক্তকণ্ঠে বলিতে বলিতে আসিতেছিলেনচারপো পূর্ণ না হলে কি ভগবান কারু এমন সর্বনাশ করেন ? করেন না । এ তার ধর্মের সংসার—এখানে অধৰ্ম হবার জো নেই। সোজা