পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१ ठद्धकौशां হইতে পুনরায় কহিল, জ্বর হয়েচ। কবরেজ ডেকে পাচন সিদ্ধ করে দাও। ম্যালোয়ারী জ্বরে আবার খায় না কে ? আমাদের দেশে ও-সব উপোস-তিরেসের পাঠ নেই বাপু ! বলিয়া সে নিজের কাজে মন দিল । অপরাহুবেলায় সে নিজেই একবাটি পাঁচন সিদ্ধ করিয়া আনিয কহিল, ওলো ও গেনি, উঠে পাচন খা । ভাতে জল দিয়ে বেথেচি, চল, খাবি আয় । মামীকে সে অত্যন্ত ভয় করিত। বিনাবাক্যে উঠিয়া খানিকট। তিক্ত পাচন গিলিয়া বমি করিয়া ফেলিয়া, পুনরায় শুইয়া পড়িল ; মা ঘরে ছিলেন না, বমিব শব্দে ছুটিয়া আসিয়া ব্যাপার দেখিয়া নিঃশব্দে দাড়াইয়া রহিলেন। মামী রাগ করিয়া উঠানে গিয়া সমস্ত পাড়া শুনাইয়া বলিতে লাগিল, এসব বাবুমেয়ে নিয়ে আমাদের গবীব-দুঃখীর ঘরে আসা কেন বাপু ? সেই হইতেই জ্ঞানদার অসুখ উত্তরোত্তর বাড়িতেই লাগিল । তাহার ভামিনী-মামী সেই যে প্রথম দিনেই বলিয়াছিল, বাছা, পল্লীগ্রামে সাপের কামড়ে আর কাটা লোক মরে, মরে যা তা ঐ ম্যালোয়ারীতে । একবার ধরলে আর রক্ষে নেই। তাহার কথাটার সত্যতা সপ্রমাণ হইতে বেশি বিলম্ব ঘটল না। অনতিকালমধ্যেই জ্ঞানদাকে একেবারে শয্যাগত করিয়া ফেলিল। সেদিন কার্তিকের সংক্রান্তি । দুৰ্গা ঘরে ঢুকিয়া আশ্চর্য হইয়া দেখিলেন, বৌ জ্ঞানদার শিয়রে বসিয়া তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া দিতেছে। একে ত সংসারের কাজ ছাড়িয়া এই সব বাজে কাজ করিবার তাহার অবসরই নাই, তাহতে পরের মেয়ের প্রতি এই অযাচিত সেবােটা এমনি একটা প্রকৃতি-বিরুদ্ধ বিসদৃশ কাণ্ড বলিয়া দুর্গার মনে হইল যে, তিনি দাদার প্রস্তাবিত সেই বিবাহব্যাপারটা স্মরণ করিয়া আশঙ্কায় কণ্টকিত হইয়া উঠিলেন। ভামিনীর এই যত্নটা যে সেইজন্যই, তাহাতে আর সংশয়মাত্র রহিল না। কারণ,