পাতা:অরক্ষণীয়া - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ö'ዩጏ অরক্ষণীয়া তবুও যখন মাধুরী ফিরিয়া আসিল না, তখন জ্ঞানদা আর চুপ করিয়া বসিয়া থাকিতে পারিল না । ভাবিল, নুন জিনিসটা ত আর ছোয়া যায় না-তাই বোধ করি এ আদেশটা তাহারই উপরে হইয়াছে। তখন মলিন, শতচ্ছিন্ন পরিধেয়খানিতে সৰ্বাঙ্গ সতর্কে আচ্ছাদিত করিয়া লইয়া, সে নুন হাতে করিয়া ধীরে ধীরে দোরগোড়ায় আসিয়া দাড়াইল । ছেলে দুটি তাহাকে দেখিতে পাইল না । জ্যাঠাইমা তাহার। আপাদমস্তক বার-দুই নিরীক্ষণ করিয়া মৃদু কঠোর স্বােব প্রশ্ন করিলেন, তোমাকে আনতে কে বললে ? মাধুরী কৈ ? জ্ঞানদা ঘরের বাহির হইতেই প্রায় চুপি চুপি বলিল, কি জানি কোথায় গেল । তাই তুমি এলে ? এক কথা তোমাকে কতবার মনে করিয়ে দিতে হবে যে, তোমার মখ দেখলে সাত-পুরুষ নরকস্থ হয় ? আমার সুমুখে তুমি এসে না । ঐ যে অতুল খেতে এসেচে। কিনা, তাই তোমাব সামনে আসাই চাই ? না ? নুনের পাত্রটা ঐখানে রেখে দিয়ে যাও । পাত্রটা রাখিয়া দিয়া জ্ঞানদা চলিয়া গেল। সে সুদ্ধ এইজন্যই যাইতে পারিল যে, মা বসুন্ধর দ্বিধা হইয় তাহাকে গ্রহণ করিলেন না । স্বর্ণ স্বয়ং উঠিয়া নুন পরিবেশন কবিলেন এবং স্বস্থানে বসিয়া অতুলের পানে চাহিয়া কহিলেন, তুই ব্যাটাছেলে, পুরুষমান্তষ-তোর আবাবা লজ্জা কি যে ঘাড় হেঁট করে বসে আছিস ! খা । মাধবীর মামা প্রশ্ন করিল, ও কে দিদি ? স্বর্ণ একটখানি হাসিয়া কহিলেন, ও কিছু না-তোমরা খাও । কিন্তু অতুলের সমস্ত খাবার বিস্বাদ হইয়া গেল। লুচির টুকরো কিছুতেই যেন সে গিলিতে পারিল না । গিলিবে কি করিয়া ? আজি সে মাধুরীকে দেখিয়া ভুলিয়াছে, তাহাতে ভুল নাই ; কিন্তু জ্ঞানদাকেও তে সে চিনিত । এখনও জ্ঞানদা তাহাকে ভালবাসে, কি ঘূণা করে, যদিচ ঠিক জানিত না, কিন্তু একদিন সে যে তাহাকেই প্রাণাপেক্ষা