বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
অলৌকিক নয় লৌকিক ২

 অমিয়বাবু আর এগোলেন না। তবে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে প্রশ্ন করলেন, আর আলমারিটা পড়ল কী করে?

 ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তাই পড়েছে।

 একজনের পক্ষে ঠেলে ফেলে দেওয়া আদৌ সম্ভব? আপনি ফেলতে পারবেন?

 বললাম, আমি তো পারবই, এখানে উপস্থিত আমাদের সমিতির যাকে সবচেয়ে দুর্বল বলে আপনার মনে হয়, তাকেই ডেকে নিন, দেখবেন সেও ফেলে দেবে।

 আর বাল্বগুলো ফাটছিল কী করে? অমিয়বাবু প্রশ্ন করলেন।

 এখানেও মানুষের হাত ছিল। ফাটানো হচ্ছিল বলেই ফাটছিল।

 সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অমিয়বাবু জানালেন তাঁর ধারণা বাল্ব থেকেই কোনও একটা অজ্ঞাত রশ্মি বেরিয়ে এসে আলমারি উল্টে দিয়েছে, কাচগুলো ভেঙেছে। সৌম্যেরও বক্তব্য ছিল ওই ধরনের। সৌম্যের কথামতো ও দেখেছে বাল্ব থেকে একটা হলদে রশ্মি বেরিয়ে এসে আলমারিতে আঘাত করেছে।

 ফ্যান দোলার ব্যাখ্যাও চেয়েছিল অমিয়বাবুর ঘনিষ্ঠ একজন। জানিয়েছি ফ্যান দোলালেই দোলে। কেউ দুলিয়ে দিয়েছিল।

 কে এমনটা করেছে? আমাদের এ ঘরে থাকি মাত্র তিনজন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমরাই। সুতরাং আপনার কথা মেনে নিলে এটাই দাঁড়ায় আমার স্ত্রী বা ছেলে কেউ এ-সব করেছে। আমার স্ত্রী কি পাগল যে ধুম্-ধুম্‌ করে জিনিস-পত্তর ভাঙবে। আমার ছেলেও যদি ভেঙে থাকে, তবে একবারও কি আমরা দেখতাম না। অমিয়বাবু বললেন।

 বললাম, গত বুধবার প্রথম সাক্ষাৎকারে আপনি কিন্তু আমাকে বলেছিলেন ম্যাণ্ডেলাকে সংবর্ধনা দেবার দিন সন্ধ্যায় ঘরে ঢোকার সময় বাল্বটা দুম্‌ করে ফেটে যেতে দেখেছিলেন, তার পর আর একটি ঘটনাও আপনি নিজের সামনে ঘটতে দেখেননি। দেখেছেন ঘটে যাওয়ার পর। আপনার স্ত্রীর সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেছি। উনিও কোনও ঘটনা নিজের চোখে ঘটতে দেখেননি, দেখেছেন ঘটে যাওয়ার পর। ঘটনাগুলো ঘটার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী কিন্তু আপনার ছেলে। আজও সাংবাদিকদের সামনে বহুবার বলেছেন, কাচের জিনিস ঘরে রাখলে আধ ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙে যাচ্ছে। গতকাল সন্ধেয় এসে বউদির (তৃপ্তি দেবী) কাছ থেকে জানতে পারি, কোনও এক জ্যোতিষী না বাবাজি কী একটা জিনিস দিয়ে বলেছেন, সৌম্যের ওপর