ভূমিকা
বিজ্ঞান লেখক মাত্রেই বিজ্ঞানমনস্ক, সমাজমনস্ক নন। এঁরা অনেকেই তাগা-তাবিজ ধারণ করেন, কুসংস্কারের কাছে ব্যক্তিজীবনে নতজানু হয়েও লেখনিতে হাজির করেন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কঠিন-কঠোর শব্দরাজি। বিজ্ঞানমনস্কতা, সমাজমনস্কতা, শুধুমাত্র কলমের ডগার বা জিভের আগায় কথার ফুলঝুরি জ্বেলে অর্জন করা যায় না, এটা বেঁচে থাকার শ্বাস-প্রশ্বাস ও ভাত-রুটির মতোই জীবনের প্রতি মুহূর্তের কাজ-কর্মের মধ্যে প্রতিফলিত হওয়ার ব্যাপার। প্রবীর ঘোষ লেখনিতে, কথায় ও জীবনচর্চায় একাত্ম এক বিরল ব্যক্তিত্ব, জীবন্ত কিংবদন্তি। সুদীর্ঘ বছর নিজেকে মগ্ন রেখেছেন সাধারণ মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক, সমাজমনস্ক করে গড়ে তোলার কাজে। সুকঠিন এই কাজকে বাস্তবাতয়িত করতে একি সঙ্গে তুলে নিয়েছেন কলম, ছুটে যাচ্ছেন গ্রামে-গ্রামে, শহরে-শহরে, বক্তব্য রাখছেন, হাতে-কলমে বিভিন্ন জিজ্ঞাসার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, গড়ে তুলছেন আন্দোলন, মুখোমুখি হচ্ছেন চ্যালেঞ্জের, প্রলোভনের এবং অবশ্যই মৃত্যুর। যে দেশে সাংসদ বিক্রি হয় গরু-ছাগলের মতোই, যে দেশের শাসকদল নির্বাচনের খরচ চালাতে, দলের সম্পত্তি বাড়াতে প্রতিনিয়ত শোষকদের কাছে বিক্রি হয়, যে দেশের শাসক দলের চুনো মস্তানরাও চাকরি-ব্যবসা না করেই গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়ে যায়, সে দেশেরই একজন প্রবীর ঘোষ একটা প্রবন্ধ না লেখার জন্য পনেরো লক্ষ টাকার প্রস্তাব পেয়েও পরম অবহেলায় ও ঔদাসিন্যের সঙ্গে প্রস্তাবের মাথার পদাঘাত করেন। বিনিময়ে মেনে নেন জীবনের ঝুঁকি। তাঁর এই নির্লোভি সাহসিকতা বহুজনকে অবশ্যই প্রেরণা দিয়েছে এবং দেবে। বহুর মধ্যে জাগিয়ে তুলেছে এবং তুলবে জীবনের মূল্যবোধ।
প্রবীর ঘোষের 'অলৌকিক নয়, লৌকিক' বইটির দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশিত হল এমন এক বিশেষ এতিহাসিক মুহূর্তে যখন ধর্মের উন্মাদনা ও সম্প্রদায়গত উন্মাদনা দেশের শ্রমজীবী মানুষদের সংগ্রামী প্রতিবাদী চেতনাকে বিশাল অজগরের মতোই একটু একটু করে গ্রাস করে চলেছে। আমরা একবিংশ
১১