বারাসাত শাখার বিলি করা প্রচারপত্রের ও পোস্টারের দৌলতে জানতেন আমার কাছে পরাজিত অবতার ও জ্যোতিষীদের নাম। আজ ২৬ মার্চ ’৮৯। গত মাসখানেক ধরে অবতার গৌতম ভারতীর সঙ্গে আমার গোলমালের খবরটা পেশাদার অলৌকিক মাতাজি বিজয়া দেবীর অজানা থাকার কথা নয়, বিশেষত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় যখন এই নিয়ে যথেষ্ট হইচই চলছে। এত কিছু জানার পরেও তিনি আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে এগিয়ে এসেছেন। তাঁর এই এগিয়ে আসার মধ্যে যথেষ্ট পরিকল্পনার ছাপ রয়েছে। তিনি ভালোমতোই জানেন, ভাববার মতো যথেষ্ট সময় সুযোগ না দিলে পৃথিবীর সেরা জাদুকরকেও পরাজিত করা যায় জাদু-কৌশল দিয়েই। এটা জানেন বলেই তাঁর লোকজন দিয়ে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন, যাতে বাধ্য হই এই মুহূর্তে তাঁর মুখোমুখি হতে। স্বাভাবিক কারণেই আমি নিশ্চয়ই এমন একটা অসম্ভব ঝুঁকি নিতে রাজি হব না, এটাও বিজয়া দেবীর জানা। রাজি না হলে গণ্ডগোল পাকিয়ে আমাদের আলোচনাচক্র ও অলৌকিক বিরোধী বিজ্ঞান শিক্ষণ শিবিরের কাজ ভণ্ডুল করে দিতে পারলে এটাই বিশাল করে প্রচার করা যাবে—বিজয়া ঘোষের চ্যালেঞ্জের মুখে প্রবীর ঘোষের পলায়ন, ফলে ক্ষুব্ধ দর্শকদের হামলায় যুক্তিবাদী সভা পণ্ড।
বিজয়া দেবীর কথা শেষ হতেই প্রচুর হাততালি পড়ল। প্রশ্ন করলাম, “আপনি কোথায় থাকেন?”
“বারাসাতের বালুরিয়ায়।”
“আপনি এর আগে কখনও আত্মা এনেছেন?” প্রশ্ন করলাম।
বিজয়া দেবী তাঁর ডান হাতের মাউথপিসটা মুখের কাছে এনে শ্রোতা ও দর্শকদের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমি প্ল্যানচেট করে আত্মা আনি। অনেকেই আমার কাছে আসেন তাঁদের প্রিয়জনের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ করার ইচ্ছেয়। মৃত্যুর আগে যে কথা জেনে নেওয়া হয়নি তেমন অনেক কথাই জেনে নিতে চান অনেকে। অনেকে জানতে চান, তাঁদের প্রিয়জনের আত্মা এখন কেমন আছে। অনেকে শুধুমাত্র প্রিয়জনের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগটুকু পেতেই আকুল হয়ে ছুটে আসেন।”
জিজ্ঞেস করলাম, “এর জন্য আপনি কি কোন পারিশ্রমিক নেন?”
“না, না, আমি কিছুই দাবি করি না। ভালোবেসে যে যা দেন, তাই নিই।” বিজয়া দেবী জানালেন।
সম্প্রতি আনন্দবাজারের প্রকাশিত আচার্য গৌতম ভারতীর সাক্ষাৎকারটির