ভবিষ্যৎবাণী করতে সক্ষম। মারণ-উচাটন, তুকতাক সবই আয়ত্তে। ডাকিনী বিদ্যার সাহায্যে যে কোনও রোগীকে ইচ্ছে করলেই সুস্থ করে তুলতে পারেন, সে কোনও সুস্থ মানুষকে পারেন মারতে। ঈপ্সিতার দাবি, ডাইনির এইসব অলৌকিক ক্ষমতা বিজ্ঞানসম্মত সাধনার ফল। অলৌকিক ঘটনার প্রতি চিরকালই আমার আকর্ষণটা বড় বেশি। এই ধরনের কোনও ঘটনা শুনলে সত্যানুসন্ধানে নেমে পড়ার ইচ্ছেটা প্রবলতর হয়ে ওঠে। তার মধ্যে আবার, অলৌকিক ব্যাপার-স্যাপার যদি ‘বিজ্ঞানসাধনার ফল’ হয় তবে তো কথাই নেই। ঈন্সিতার ঘনিষ্ঠ এক সাংবাদিককে অনুরোধ করলাম আমার সঙ্গে ঈপ্সিতার পরিচয় করিয়ে দিতে। কয়েক দিনের মধ্যে খবর পেলাম, ঈপ্সিতা আমার মুখোমুখি হতে অনিচ্ছুক।
৮৮-র জুনের শেষ সপ্তাহে পড়ন্ত বিকেলে ইপ্সিতার দক্ষিণ কলকাতার লেক রোডের ছবির মতো সাজানো ফ্ল্যাটে গিয়েছিলাম ‘আজকাল’ পত্রিকার তরফ থেকে সাক্ষাৎকার নিতে। ঘরের দু’পাশে দুই বেড-ল্যাম্প সৃষ্ট আলো-আঁধারের মাঝে এক সময় ঈলিতার আবির্ভাব ঘটল। যথেষ্ট সময় ও যত্ন নিয়ে নিজেকে সাজিয়েছিলেন। আমি ও আমার সঙ্গী চিত্র-সাংবাদিক তাপস দেব পরিচয় দিলাম। ঈপ্সিতা বসলেন। আমার মিথ্যে পরিচয়কেই সত্যি বলে ধরে নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। সত্যানুসন্ধানে এসে প্রথম সত্যটি আমার সামনে প্রকাশিত হল, ঈপ্সিতার থট্ রিডিং ক্ষমতার দাবি নেহাতই বাত্কে-বাত্।
মণ্ট্রিয়লে শিক্ষা ও ডাইনি দীক্ষা পাওয়া ঈপ্সিতা ইংরেজির সঙ্গে কিছু কিছু বাংলা মিশেল দিয়ে জানালেন, তাঁদের সংস্থার নাম ‘ওয়ার্ল্ড উইচ ফেডারেশন’। কেন্দ্রীয় কার্যালয় মণ্ট্রিয়লে। সংস্থার তরফ থেকে পৃথিবীকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিন প্রধানকে। এঁরাই সংস্থার সর্বোচ্চ পদাধিকারী। পূর্বাঞ্চলের কার্যালয় নিউ দিল্লি, প্রধানা স্বয়ং ঈন্সিতা। তবে ঈপ্সিতা যখন তাঁর কলকাতার ফ্ল্যাটে থাকেন তখন সেটাই হয়ে ওঠে অস্থায়ী কার্যালয়। ডাইনিপীঠের কেন্দ্রীয় সদস্য সংখ্যা মাত্র ৭৫ এবং সকলেই মহিলা।
অনেক পুরুষই সদস্য হওয়ার ব্যর্থ আবেদন রেখেছিলেন। আলোচনার মাঝে চা ও বিস্কুট এল। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললাম, “কৈশোর থেকেই ওকাল্ট বা রহস্যবিদ্যার প্রতি একটা তীব্র আকর্ষণ অনুভব করেছি। এ-জন্য ডাইনি, ডাইন, ওঝা, গুনিন, জানশুরু, তান্ত্রিক, ভৈরবী, অবতারদের পিছনে কম ঘুরিনি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই গাদা, সময় আর গুচ্ছের অর্থনাশই সার হয়েছে। যখন বাস্তবিকই সন্দেহ করতে শুরু