ভূতুড়ে সম্মোহনে মনের মতো বিয়ে :
কাজী সিদ্দিকীর চ্যালেঞ্জ
‘আলোকপাত’ জানুয়ারি ১৯৮৮ সংখ্যায় পাঠকদের অধিকার বিভাগে ‘দোষ ধর্মের নয়, ব্যক্তির’ শিরোনামে একটি চিঠি প্রকাশিত হয়। চিঠিটি লিখেছিলেন চুরুলিয়া, বর্ধমান থেকে কাজী খোদা বক্স সিদ্দিকী। চিঠিটা খুবই কৌতূহল জাগানোর মতো এবং তারই সঙ্গে যুক্তিবাদীদের বিরুদ্ধে একটি জোরালো চ্যালেঞ্জ। চিঠিটি এখানে তুলে দিলাম।
আলোকপাত নভেম্বর ৮৭ সংখ্যায় ‘সম্মোহনে অসম্ভব সম্ভব হয়?’ পড়লাম। প্রবীর ঘোষ মহাশয়ের চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে জানাই, বিজ্ঞান বিশ্ব সৃষ্টি করেনি এবং নিয়ন্ত্রকও নয়।
মূলত ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনো প্রভেদ নেই। সূক্ষ্মতাত্ত্বিক ব্যাপার হেতু সাধারণ বুদ্ধিতে এর ব্যাখ্যা মেলে না। এই তত্ত্বকে প্রখ্যাত সুফী সাধক জোলনুন থেসরী তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথা—
১) ঈশ্বরের একত্ব তত্ত্ব, এই জ্ঞান সাধারণ বিশ্বাসীদিগের।
২) প্রামাণিক ও যৌক্তিক তত্ত্ব, এই জ্ঞান বৈজ্ঞানিক পণ্ডিতদিগের।
৩) একত্রে গুণ-রাশির তত্ত্ব, এই জ্ঞান ঈশ্বর প্রেমিক ঋষিদিগের।
এই সূত্রানুসারে প্রবীরবাবু দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত বলা যায়। এখানে ধর্মের ভড়ং করে কেউ যদি প্রতারণা করে তাহলে তা ধর্মের দোষ নয়—দোষ ব্যক্তির। এই জাতীয় প্রতারণা ধরে বিজ্ঞানের মহিমা গাথায় ধর্মকে অস্বীকার করা অহংকারের প্রকাশ মাত্র—এটা অযৌক্তিক ও অসমীচীন! এই অহংকারের বশবর্তী হয়ে তিনি বিরাট অংকের চ্যালেঞ্জ করে বসেছেন। ফটো সম্মোহন বা তান্ত্রিক মতে এ জাতীয় কোনো প্রক্রিয়ার ফল হয় কি না জানি না। তবে এমন কিছু প্রক্রিয়া আছে যা আকাঙ্ক্ষিত পুরুষ বা নারীর মধ্যে প্রগাঢ় প্রেমাবেগে বা বিতৃষ্ণা এনে মিলনের সূত্রপাত ঘটিয়ে দিতে বা বিচ্ছিন্ন করতে পারে। অবশ্যই কোনোরূপ প্রচলিত সম্মোহন নয় এটা সম্পূর্ণ ধর্মীয় প্রক্রিয়া। প্রবীরবাবুর যদি তাঁর পরিচিত কোন নারীকে প্রকৃতই জীবন সঙ্গিনী করার ইচ্ছে থাকে তাহলে কোনো ছবি-টবি নয় শুধুমাত্র কয়েকটি প্রকৃত তথ্য দিলেই হবে। তথ্যগুলো অবশ্যই অপার্থিব নয়।
যদিও তিনি ফটো-সম্মোহন বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেছেন তবুও তিনি আগ্রহী হলে তাঁর এ প্রক্রিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছি।