বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০০
অলৌকিক নয় লৌকিক ২

 মানুষ ও গৃহপালিত পশুদের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা না দিয়েই ঝাড়ফুঁক, মন্তর-তন্তরে রোগ সারে না, অতএব তোমরা ওঝা, গুনিন, জানগুরুদের কাছে যেও না বললে কিছুতেই কাজ হতে পারে না। “কেরোসিনের কম আলোয় কাজ করলে বা পড়লে চোখের ক্ষতি হয়” এ উপদেশ তখনই দেওয়া সাজে যখন কেরোসিনের বিকল্পে প্রায় সমমূল্যে বিদ্যুৎ সেইসব মানুষদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

 রোগ সারাতে ঝাড়-ফুঁকের বিকল্প হিসেবে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা (অবশ্যই বিনামূল্যে) না দিয়েই ঝাড়-ফুঁকের বিরুদ্ধে যতই ক্তব্য রাখি, তা কার্যকর হবে না।

 একই সঙ্গে এ-ও সত্যি—স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে দিলেই আদিবাসী মানুষরা তাঁদের এতদিনের গড়ে ওঠা বিশ্বাস বর্জন করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দৌড়াবেন না। সহযোগী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে যে খবর পেয়েছি এবং প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যতটুকু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তাতে এটুকু বলতে পারি, চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধে যেখানে দেওয়া হচ্ছে সেখানকার আদিবাসী মানুষেরা ধীরে ধীরে সেসব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতেও শুরু করেছেন। আদিবাসী সমাজের উন্নতির জন্য পরিকল্পনা মাফিক সমস্ত কাজ-কর্ম একযোগে শুরু করলে আদিবাসী সমাজের মানুষদের কাছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো আরও বেশি বেশি করে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে থাকবে।

 পানীয় জলের প্রচণ্ড অভাব এবং তার দরুন জলবাহিত বিভিন্ন রোগের আক্রমণের শিকার হন এইসব বঞ্চিত মানুষজন। এ বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রশাসনকে নিতে হবে।

 বহির্জগতের সঙ্গে আদিবাসীদের মেলামেশা, যোগাযোগ যাতে বাড়ে, সে বিষয়েও দৃষ্টি দিতে হবে। সরকারি তত্ত্বাবধানে আদিবাসীদের জমির মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে।

জ্ঞানগুরুদের অলৌকিক ক্ষমতার রহস্য সন্ধানে

 রেভারেণ্ড পি ও বডিং-এর লেখা থেকে ব্রিটিশ আমলের সাঁওতাল পরগনার এক সহকারী কমিশনারের কথা জানতে পরি, যিনি অদ্ভুত কৌশলে অনেক ঘোষিত ডাইনির জীবন বাঁচিয়েছিলেন। ঘটনাটা ঘটাতেন অনেকটা সীতার অগ্নি পরীক্ষার ধাঁচে। সহকারী কমিশনার সাহেব ব্যাটারি চালিত বিদ্যুৎ