বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অবাক মেয়ে মৌসুমী’র মধ্যে সরস্বতীর অধিষ্ঠান...
৩৮৯

ছিলেন শৈশবে। অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে জানতে পারি, মিতার বাবার দু’কড়ে আঙুল থেকেই বেরিয়েছিল বাড়তি দুটি আঙুল। একটা পুরোন ছবিও উদ্ধার করা গিয়েছিল, যাতে মিতার মা ছিলেন চেয়ারে বসে, বাবা দাঁড়িয়ে। বাঁ হাতের দৃশ্যমান কড়ে আঙুল নজর করলেই চোখে পড়ে বাড়তি আঙুল। এটুকু বললে বোধহয় খুব একটা অপ্রাসঙ্গিক হবে না আদিত্যকে বুঝিয়েছিলাম, জিনের সুপ্তি ভাঙার তত্ত্বে বিশ্বাসী মনোবিজ্ঞানীদের মতামত। ওদের পরিবারে ফিরে এসেছিল শান্তি।

 এই তত্ত্ব ঠিক হলে এমনটা ঘটাও অস্বাভাবিক নয়—যে পূর্বপুরুষের প্রতিভা বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, অনুকূল পরিবেশের অভাবে বিকশিত হয়নি, সেই প্রতিভাই আজ বিকশিত হয়েছে, উত্তর-পুরুষের মধ্যে।

বিস্ময়কর স্মৃতি নিয়ে দু-চার কথা

বেদ রচিত হয়েছিল ১৫০০ থেকে ১০০০ খ্রিস্টপূর্বে। সে-যুগের ঋষিরা বেদকে লিপিবদ্ধ না করে কণ্ঠস্থ করে রাখতেন। বিপুল সংখ্যক শ্লোকগুলো তাঁরা যে অসাধারণ স্মৃতির মাধ্যমে বিশুদ্ধ উচ্চারণে, সুর ও ছন্দ বজায় রেখে কণ্ঠস্থ রেখেছিলেন, তা বাস্তবিকই অতি বিস্ময়কর।

 প্রাচীন যুগে স্মৃতির সাহায্যেই গুরু শিক্ষাদান করতেন। শিষ্যরাও তা স্মৃতিতেই ধরে রাখতেন এবং পরবর্তীকালে স্মৃতিকে কাজে লাগিয়েই শিক্ষা দিতেন। স্বভাবতই সে যুগের পণ্ডিত ও শিক্ষাগুরুদের স্মৃতি হয়ে উঠেছিল অসাধারণ। তাঁদেরই কিছু কিছু প্রচ্ছন্নভাবে উপস্থিত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ (recessive) জিন বিবর্তন পরম্পরায় বাহিত হয়ে বহু প্রজন্ম পরে কোনও ব্যক্তির মধ্যে এসে থাকতে পারে। কিন্তু এই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ জিন ঋষিরা পেয়েছিলেন কোন পূর্বপুরুষের থেকে? আসলে এঁরা শ্লোকগুলো স্মৃতিতে ধরে রাখতে তীব্রভাবে আগ্রহী ছিলেন এবং প্রয়োজনে স্মৃতিতে ধরে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন।

 এত দীর্ঘ সময় কি জিন প্রচ্ছন্নভাবে নিজ বৈশিষ্ট্যকে বজায় রাখতে সক্ষম? এই প্রশ্নের উত্তরে এই তত্ত্বে বিশ্বাসী মনোবিজ্ঞানীরা উদাহরণ হাজির করেন—অনেক শিশু জন্মায় মনুষ্যেতর প্রাণীর অঙ্গ নিয়ে—যেমন ছোট্ট ‘লেজ’ একটি দৃষ্টান্ত। তাঁদের মতে মনুষ্যেতর যে প্রাণীটি অতীতে ছিল, তারই প্রচ্ছন্ন জিনের বর্তমান উপস্থিতিই এর জন্য দায়ী।

 একান্ত প্রয়োজনে ঋষিরা বা গুরুরা শাস্ত্রকে স্মৃতিতে ধরে রাখতেন; তেমন উদাহরণ এ যুগে আমাদের দেশে বিরল হলেও অসম্ভব নয়। বিদেশে প্রচুর