বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৪৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২৮
অলৌকিক নয় লৌকিক ২

এলো ‘আজকাল’ পত্রিকার তরফ থেকে। আমন্ত্রণ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে পেলাম তাঁদের অকুণ্ঠ সহযোগিতা।

বিশ্বাসের জোরে, স্রেফ বিশ্বাসের জোরে আলি ভেসে ছিলেন!! মেনে নিতে মন চায় না। যতই প্রত্যক্ষদর্শী থাকুক, নিজের চোখে একবার না দেখে আমার পক্ষে মেনে নেওয়াটা... না, কিছুতেই পারলাম না। বারবারই মনে হতে লাগলো, ফাঁকিটা প্রত্যক্ষদর্শীদের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি এ জাতীয় ঘটনার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় কিছু কিছু ফাঁক থেকেই যায়। তবু প্রাথমিক একটা ধারণা গড়ে তুলতে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। এক সাংবাদিক বললেন, “আলি একটা অন্য ব্যাপার। উনি যখন এসে দাঁড়ালেন, ওঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হল ওঁর সারা শরীর থেকে যেন একটা জ্যোতি বেরুচ্ছে। এখনও ভাবতে গেলে গা শিরশির করে। ও এখন অন্য জগতের মানুষ। খুব কাজ থেকে ওঁর শূন্যে ভাসা দেখেছি। না স্টেজ, না আলোর কারসাজি, উনি শূন্যে ভেসে রইলেন। না না, এতে কোনও কৌশল-টৌশলের ব্যাপার ছিল না।”

 আর এক সাংবাদিক বন্ধু জানালেন, “আলি তো অলৌকিক ক্ষমতার দাবি করেননি। যোগ ক্ষমতার দ্বারা তো এমনটা করা যায়ই। আমাদের দেশে এ তো নতুন কিছু নয়। অনেক সাধু সন্তুরাই যোগ ক্ষমতায় এমনটা ভেসে দেখিয়েছেন। এমনটা যে ভেসে থাকা যায় সে তো প্রমাণ হয়েই গেছে।”

 এক সাহিত্যিক বন্ধু তো একটা গল্পই শোনালেন। একটি বিখ্যাত সাধকদের জীবন-গ্রন্থে নাকি আছে, কোনও এক সাধু গভীর ঈশ্বর বিশ্বাসে ভর করে হেঁটে উত্তাল নদী পার হচ্ছিলেন। সাধু হেঁটে চলেছেন ঈশ্বর বিশ্বাসে বুঁদ হয়ে, নেশাগ্রস্ত মানুষের মতো। পাড়ের কাছাকাছি পৌঁছে হঠাৎ সাধু হুঁশ ফিরে পেলেন-আমি এতটা পায়ে হেঁটে চলে এসেছি। শেষ পথটুকু পার হতে পারব তো? যেমনি ভাবা, অমনি টুপ করে এক টুকরো পাথরের মতোই ডুবে গেলেন। আসলে বিশ্বাসই সব। ঈশ্বরে অন্ধ বিশ্বাস রাখলে অমন অনেক কিছুই ঘটে, ঘটানো যায়—যেগুলো সাধারণ মানুষদের চোখে ‘অলৌকিক’ বলেই প্রতিভাত হয়।

 স্টেজে নয়, হোটেলের ফ্লোরে মোট দু’বার সাংবাদিকদের শূন্যে ভেসে দেখিয়েছেন আলি। কী এমন কৌশল!! যার ফলে একজন মানুষ একটু একটু করে উঠে পড়েন শূন্যে? যে সব তথাকথিত অবতাররা শূন্যে ভাসেন বলে কথিত আছে তাঁদের সে-সব কৌশল আমার অজানা নয় (উৎসাহী