বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অলৌকিক নয়, লৌকিক (দ্বিতীয় খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৪৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৩৬
অলৌকিক নয় লৌকিক ২

গু ভূত

 আশুতোষ রানা পেশায় স্কুল শিক্ষক। নিবাস ঝাড়গ্রাম। আমাদের সমিতির একজন স্থানীয় নেতা। স্ত্রী হাউজ ওয়াইফ। দুই সন্তান। স্কুলে পড়ে। এইট-নাইন হবে। ২০০৯ সাল। সময়টা সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে। আশুতোষ খবর দিল ওদের কাছাকাছি অঞ্চলে একটি বাড়িতে গু-ভূতের অত্যাচার চলেছে। যখন-তখন ঘরে দেওয়ালে কে যেন ও লেপে দিয়ে যাচ্ছে। জীবন অতিষ্ঠ হরে গেছে। কী করব? আমি সমিতিতে সমস্যাটাকে নিয়ে বললাম। বললাম, ‘কে যাবে?’ অজয় বৈরাগী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সে সময়কার নেতা। বলল, ‘আমি যাব।’ বললাম, ‘যাও। কোনও দরকার হলে আমাকে ফোন কোরো।’ আশুতোষ সমস্ত মিডিয়াকে জানিয়ে তাঁর বউ দুই সন্তান ও অজয়কে নিয়ে স্পটে গেল। নিয়মমাফিক জেনে নিল বাড়িতে কতজন ছেলে-মেয়ে থাকে, তাদের বয়স, কী করে সব। আশুতোষকে বলেছিলাম কয়েকটা তালা-চাবি নিয়ে যেতে। তাও ওরা নিয়ে গেছে। আশুতোষ আর অজয় দু-জনেই আমাকে ফোনে বলল, ‘দাদা, সব তো হল। এবার আমরা কী করব?’

 বললাম, ‘বাড়ির লোকেদের সবাইকে বার করে দাও। জানালাগুলো ভেতর থেকে বন্ধ করে দাও। তারপর যে কটা দরজা আছে, সবগুলোতেই বাইরে থেকে তালা মেরে দাও। তারপর তিন-চার ঘণ্টা বাদে দেখবে কোনও গু-ভূতের কাণ্ড নেই।


 আধঘণ্টার মধ্যে আবার ফোন। আশুতোষ জানাল, ‘দাদা প্রচুর ভিড়। কিন্তু যদি খুলে দেখি গু-ভূত দেওয়ালে গু লাগিয়ে দিয়েছে। তাহলে আমাদের কী হবে দাদা।’

 ‘কী আর হবে? পাবলিক তোমাদের খুব প্যাঁদাবে।’ ফোনটা ছাড়তে এবার অজর বৈরাগীর ফোন।

 ‘দাদা আপনি আপনার গাড়ি নিয়ে একবার চলে আসুন। আমরা সমস্যা সামলাতে পারব না। যদি দরজা খুলে দেখি গু-ভূত এসে ও লাগিয়ে দিয়ে গেছে। তাহলে কী হবে বুঝতে পারছেন? আপনি না আসা পর্যন্ত আমরা দরজা খুলব না।’

 বললাম, 'তোরা দরজা খোলার পরেও যদি দেখিস গু-ভূতের কাণ্ডকারখানা, তবে পাবলিক ও মিডিয়াদের বলবি, প্রবীরদা আসছেন। আমরা জামিন রইলাম। প্রবীরদা যদি সমাধান না করতে পারেন তবে তিনি নিজে মস্তক মুণ্ডন করে নেবেন।’