করলেও প্রেতলোকের অস্তিত্ব, জন্মান্তরের রহস্য, পীরের সমাধির (মাজার) অলৌকিকত্ব, ব্যক্তিবিশেষের সমাধি-মাধ্যমে ভগবদ্দর্শন—ইত্যাদিকে বিজ্ঞানগ্রাহ্য করার চেষ্টা সফল হবার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
প্রবীর ঘোষ দীর্ঘকালের পরিশ্রমলব্ধ গবেষণায় ও অসাধারণ মননশীলতায় পৃথিবীর বিভিন্ন রহস্যাবৃত অলৌকিক ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণের কাজে হাত দিয়েছেন। বইটি একাধিক খণ্ডে প্রকাশিত হবে। এটি প্রথম খণ্ড। এই খণ্ডে পরাবিদ্যার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বইটির গুরুত্ব বাড়িয়েছেন, বেশি উপভোগ্য করেছেন; আমাদের ধন্যভাজন হয়েছেন। কারণ, ভারতীয় কোনও ভাষায় অথবা ভারত থেকে প্রকাশিত কোনও গ্রন্থে পরাবিদ্যার ওপর এত বিস্তৃত আলোচনা ইতিপূর্বে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বিষয়টা অ্যাকাডেমিক হলেও লেখার সহজবোধ্যতা ও সাবলীলতার দরুণ সাধারণের পক্ষে সহজবোধ্য হয়েছে।
প্রবীর সাধুসন্তদের ঘটানো অনেক ঘটনাই আমাদের লৌকিক কৌশলে ঘটিয়ে দেখিয়েছেন। প্রবীর পৃথিবীর সমস্ত অলৌকিক ক্ষমতাধর এবং জ্যোতিষীদের বুজরুকির বিরুদ্ধে এক অসাধারণ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। ঘোষণা করেছেন—বিশ্বের যে কেউ অলৌকিক ক্ষমতার প্রমাণ রাখলে বা কোনও জ্যোতিষী অভ্রান্ত গণনার পরিচয় দিলে দেবেন ৫০ হাজার ভারতীয় টাকা। লেখক চান, এই চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে আরও কিছু মানুষ বুঝতে শিখুন, বাস্তবে অলৌকিক বলে কিছু নেই, অলৌকিকের অস্তিত্ব আছে শুধু পত্র-পত্রিকা, ধর্মগ্রন্থ, বইয়ের পাতায় এবং অতিরঞ্জিত গল্প বলিয়েদের গল্পে।
ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রবীর ঘোষের নির্ভিক যুক্তিবাদী সংগ্রাম নিশ্চয়ই সমাজ ও ব্যক্তির কল্যাণ করবে। প্রথম খণ্ডের আলোচ্য বিষয়গুলোর ওপর বিস্তৃত আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পরবর্তী খণ্ডের জন্য তীব্র আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম।
ডিরেক্টর
পাভলভ ইনস্টিটিউট অ্যাণ্ড হসপিটাল
১৩২/১ এ, বিধান সরণি
কলকাতা-৪
|
ডাঃ ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়
১অক্টোবর, ১৯৮৯ |