রয়ে গেছে—বাবা অলৌকিক কিছুর পরিবর্তে আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রয়োেগ করেছিলেন।
গিয়েছিলাম নূতন তীর্থ—তারক ভোলার মন্দির ও আশ্চর্য পুরুষ শ্রীশ্রীবাসুদেবের দর্শন লাভের আশায়। দিনটা ৭ জানুয়ারি ১৯৯০। দর্শনার্থীদের গাড়ির ভিড় দেখে বুঝলাম বিজ্ঞাপনের খরচটা চূড়ান্তভাবেই সার্থক হয়েছে।
বাবার সাক্ষাৎ প্রার্থনা করতে আশ্চর্য পুরুষের এক আশ্চর্য চামচা প্রথম বাধা দিলেন। পুলিশি জেরা চালিয়ে গেলেন। এতকিছুর পরও আশ্চর্য পুরুষের দর্শন মিলল না। পরিবর্তে চামচা যা বললেন, তার সারমর্ম—আমি যদি প্রবীর ঘোষ হই তো ...। এরপর যে সব নোংরা কথা বললেন সেগুলো ছাপার অযোগ্য।
রাগের কারণটা বোঝার চেষ্টা করলাম। তবে কি আমাদের পোস্টাল ডিপার্টমেণ্টের কর্মধারায় প্রভূত উন্নতি হয়েছে? ৫ তারিখে রেজিস্ট্রি ডাকে পাঠান চিঠিটা কি ইতিমধ্যেই শ্রীশ্রীবাসুদেবের কাছে পৌছে গেছে? আমার ছোট্ট চিঠিটায় বাসুদেবকে অপমান করার মতো একটি কথাও লিখেছি বলে তো বরং ছিল তাঁকে প্রণামী দেওয়ার অঙ্গীকার। পুরো চিঠিটাই তুলে দিচ্ছি পাঠক-পাঠিকাদের কাছে ন্যায়-বিচার পাবার আশায়।
শ্রীশ্রী বাসুদেব সেবাইত,
|
|
৫.১.১৯৯০
|
বাবা তারক ভোলার কৃপায় ও আপনার অতীন্দ্রিয় ক্ষমতায় কৃপাপ্রার্থী প্রতিটি রোগী রোগমুক্ত হয়েছেন বলে বৃহু প্রচার শুনেছি ও পড়েছি। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও লোকমুখে আপনার প্রচারে আকৃষ্ট হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁদের অথবা তাঁদের প্রিয়জনদের রোগমুক্তি কামনায় আপনার কাছে আসছেন। আমিও আপনার অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার খবরে আকৃষ্ট।
অলৌকিক কোনও ঘটনা বা অলৌকিক ক্ষমতাধর কোনও ব্যক্তির কথা শুনলে আমি ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রকৃত সত্য জানতে সত্যানুসন্ধান চালিয়ে থাকি। এই ধরনের সত্যকে জানার প্রচেষ্টাকে একজন সৎ মানুষ হিসেবে নিশ্চয়ই আপনি স্বাগত জানাবেন।
আপনার দাবির বিষয়ে একটি সত্যানুসন্ধান চালাতে আপনার কাছে পাঁচজন রোগীকে হাজির করতে চাই। আপনি ছ’মাসের মধ্যে রোগীদের রোগমুক্ত করতে পারলে আপনার অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা এবং বাবা তারক ভোলার মাহাত্ম্য অবশ্যই স্বীকার করে নেব ও প্রণামী হিসেবে আপনাকে দেবো ৫০ হাজার টাকা।
আগামী সাত দিনের মধ্যে আপনি চিঠির উত্তর না দিলে অথবা অনুসন্ধানের কাজে সহযোগিতা না করলে অবশ্যই ধরে নেবো আপনি মিথ্যাচারী ও বুজরুক।