কি এই শতাব্দীর অন্যতম সেরা খবর নয়? একমাত্র পত্রিকা হিসেবে এমন ‘স্কুপ নিউজ’ পেয়েও যুগান্তরের এমন গা-ছাড়া ভাবই ঘটনার সত্যতা সম্বন্ধে সন্দেহের উদ্রেক করে। আমি এই বিষয়ে আরও বিশদভাবে আলোকপাতের জন্য যুগান্তর চিঠিপত্র বিভাগে একটি চিঠি দিই। এই চিঠি লেখার পেছনে আমার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল, ঘটনার সত্যতা যাচাই করার সুযোগ লাভ। আমার সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। এতে এটাই স্পষ্ট হয় যে, মিথ্যে খবর ছেপে ছিল শুধু এই উদ্দেশ্যে যে—পাবলিক খাবে ভালো।
অশ্বিনী দত্ত রোড, কলকাতা-২৮-এ গড়ে উঠেছে ‘আনন্দধাম’, ভগবান শ্রীসদানন্দ দেবঠাকুরের আশ্রম। ভক্ত শিষ্য-শিষ্যারা বাবাকে অবতার জ্ঞানে নয়, দেব জ্ঞানেই পুজো করেন। সদানন্দের কথায়—“আমি ব্রহ্ম, আমি শক্তি। নাম কর, নাম কর, আমায় পাবি। তোরা যেখানেই যাঁকে পূজা করিস না কেন জানবি তা—আমাতেই অর্পণ হয়।”
ভক্তদের প্রতি সদানন্দের বরাভয়—“তুই আমার নাম নে,—তোর সকল পাপ ধ্বংস করব আমি... তোর বাঞ্ছা পূরণ করব আমি। আমাকে ডাকতে থাক। ডাকতে ডাকতে সুগন্ধ হয়ে তোর মনকে দেব মজিয়ে, জ্যোতিঃ রূপে হবে প্রকাশ, রূপ হয়ে দর্শন, ভাব হয়ে করব আলিঙ্গন, বিভোর হয়ে ঢলে পড়বি আমারই কোলে। তখন শুধু আনন্দ-আনন্দ-সদানন্দ।
পত্র-পত্রিকায় ছবিসহ শ্রীসদানন্দের বিজ্ঞাপন কিছুদিন ধরেই চোখে পড়ছিল। বিজ্ঞাপনগুলোতে ‘অলৌকিক সিদ্ধপুরুষ’, ‘প্রিয়দর্শন দেবপুরুষ’ ইত্যাদি বিশেষণ শ্রীসদানন্দের উপর বর্ষিত হয়েছে। বিজ্ঞাপনগুলোতে বলা হয়েছে—শ্রীসদানন্দ কৃপা করলে রোগমুক্তি, সৌভাগ্যলাভ ও অসাধ্যসাধন হয়।
দেবপুরুষটির দর্শনে হাজির হলাম ‘আনন্দধামে’। সময় ১৯৮৭-র ২৮ জুলাইয়ের সন্ধ্যা। প্রতীক্ষাকক্ষে আরও অনেকের মতো আমাকে নাম পাঠিয়ে কিছুক্ষণ বসতে হল। দেওয়ালের নানা লেখা পড়ে ও ‘পুরমপুরুষ শ্রীসদানন্দ লীলা মাহাত্ম্য: (প্রথম খণ্ড)’র পাতা উল্টে সময় কাটালাম। দেওয়ালে উন্মাদ রোগ, হিস্টিরিয়া-সহ বহু রোগ ভাল করে দেওয়ার গ্যারাণ্টির কথা বড় বড় রঙিন হরফে লিপিবদ্ধ। যে লেখাটা আমাকে সবচেয়ে বেশি অবাক করল সেটা হল, বন্ধ্যারমণীকে মাতৃত্ব দানের গ্যারাণ্টি। লীলা মাহাত্ম্যও খুব আকর্ষণীয় বই। বইটিতে জনৈকা শ্রীমতী লক্ষ্মী ঘোষ জানিয়েছেন, এক হিস্টিরিয়া রোগীকে শুধু একটি তাগা বেঁধে বাবাঠাকুর দু-দিনে তাকে ভাল করেছিলেন।
লক্ষ্মীদেবীর এক আত্মীয় বহু বছর ধরে প্যারালিসিস রোগে ভুগছিলেন। সর্বাঙ্গ অসাড়। হাসপাতালে যখন মৃত্যুর দিন গুনছেন সেই সময় লক্ষ্মীদেবী রোগীর স্ত্রীকে