পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
১৬৬
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
১৬৬

১৬৬ অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) করুন, যার উত্তর ‘ঘ’ ও ‘না’ তে হয়। আত্মা আংটিটাকে স্পষ্টভাবে ‘হা’ বা ’-এর দিকে দোলাতে দোলাতে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন।” | প্রশ্ন শুরু হলাে। প্রশ্ন করছিলেন সাংবাদিক বন্ধুরা। আংটি পেন্ডুলামের মতাে দুলতে দুলতে কখনও হ্যা’, কখনও বা ‘না’য়ের উপর দোল খেতে খেতে উত্তর দিতে লাগল। এমসময় মিডিয়াম’ পাল্টাতে হল নিবেদিতা বেহুঁশের মতাে হয়ে যাওয়ায়। সাংবাদিকদের দাবিতে এবার মিডিয়াম হলেন সুদেষ্ণা রায়। প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্না মহিলা। একইভাবে আংটি বাঁধা সুতাে ধরলেন। এলেন সত্যজিৎ রায়ের আত্মা। আবার প্রশ্নবাণ। আবার আংটির উত্তরদান। একসময় দীপান্বিতা জিজ্ঞেস করলেন, “আত্মাকে দিয়ে রাইটিং প্যাডে লেখানাে যাবে না?” বললাম, “নিশ্চয়ই যাবে।” রাইটিং প্যাড এলাে। প্যাডে ডটপেন ঠেকিয়ে মিডিয়াম’ হিসেবে সুদেষ্ণা আবার রাজীব গান্ধীর আত্মার আগমন কামনা করতে লাগলেন। আমি ধীর ও প্রত্যয়ী স্বরে বলে যাচ্ছিলাম, “গভীরভাবে ভাবতে থাক রাজীব গান্ধীর আত্মা আসছে। পেনের ডগার দিকে তাকিয়ে থেকে গভীরভাবে ভাবতে থাক। আমি এই যে ধারণা সঞ্চার করছিলাম, বা সাজেশন’ দিচ্ছিলাম তা কিন্তু বেশিক্ষণ দিতে হল না। মাত্র মিনিট দুয়েক। পেন কাঁপতে লাগল। আবার সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণ। এবার প্রশ্নের উত্তরগুলাে আসতে লাগল লিখিতভাবে। | অনেক ছবি-টবি উঠল, এবং প্ল্যানচেট পর্ব শেষ হতে রহস্য ভাঙলাম। আমি নিবেদিতা ও সুদেষ্ণার মনে ধারণা সঞ্চারিত করেছিলাম আত্মাকে গভীরভাবে ভাবতে থাকলে আত্মা আসবেন এবং উত্তর দেবেন। দু'জনের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমাকে অতি বিশ্বাসযােগ্য মানুষ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। দু’জনের মনেই সচেতন বা অচেতনভাবে আত্মার অমরত্ব নিয়ে একটা বিশ্বাস বা দ্বিধা ছিল। এসবের ফলস্বরূপ দু’জনেই সম্মােহিত হয়ে আংটি দুলিয়েছেন, লিখেছেন। এঁরা কেউই সচেতনভাবে বা জ্ঞাতসারে এসব উত্তর দেননি। অবচেতন বা নিজেদের অজ্ঞাতসারেই গভীরভাবে মনঃসংযােগ করেছিলেন বলেই এমনটা ঘটেছিল। একইভাবে যাকে সম্মােহিত করছেন, তাকে যদি বলেন, “একমনে শুধু আমার কথাই শুনবে” এবং যে যদি আপনার নির্দেশ মেনে আপনার কথা গভীরভাবে শুনতে থাকে, তবে একসময়ে বাইরের কোনও শব্দ, কোনও আওয়াজ আর তার চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পারবে না। কী যা বলতে পার, বাইরের জগতের শব্দ এবং সমস্ত চিন্তা থেকেই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। বাইরের জগতের সঙ্গে তখন একমাত্র যােগসূত্র থাকে যিনি সম্মােহিত করছেন তিনি। এই সময়ে যিনি সম্মােহিত করছেন। তিনি যদি বলতে থাকেন (ধারণা সঞ্চারিত করতে থাকেন) শরীরের