কোনও একটি অঙ্গ অসাড় হয়ে যাচ্ছে, তবে একসময় অসাড়ই হয়ে যায়।
সম্মোহন নিয়ে নানা ভুল ধারণা
৯ জানুয়ারি ’৯৬। গতকাল একটি দৈনিক পত্রিকায় লেখা জমা দিতে গিয়েছিলাম। লেখাটি পেতেই সম্পাদক পড়তে দিয়ে দিলেন এক সম্পাদক সহকারীকে। বিষয়—‘সম্মোহন’। লেখাটি হাতে নিয়ে এবিষয়ে তার জ্ঞানের ভাণ্ডার আমার কাছে উপুড় করে দিতে বললেন “এ তো জানি-ই। সম্মোহন ব্যাপারটাই তো বুজরুকি।”
তাঁর মারাত্মক জানার পরিচয়ে চমকে উঠলাম। বললাম, “সম্মোহন ব্যাপারটা কেন বুজরুকি হতে যাবে। যে সব মনোরোগ চিকিৎসক পাভলভিয়ান পদ্ধতিতে মনোরোগের চিকিৎসা করেন, তারা সম্মোহনের সাহায্য নেন।
জাদুকরেরা সম্মোহনের নামে বুজরুকি করেন বলেই
অনেকেই ‘সম্মোহন’ ব্যাপারটাকে বুজরুকি’
বলে ভুল করেন।”
‘সম্মোহন’ সম্বন্ধে দু-দল মানুষের মধ্যে দুটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। এক, জাদুকররা সম্মোহন জানেন এবং জাদু দেখাতে সম্মোহন প্রয়োগ করেন। দুই, ‘সম্মোহন’ ব্যাপারটা ‘অস্তিত্বহীন কল্পনা’, ‘বুজরুকি’। দুটি ধারণাই ভুল।
ইভান পেত্রভিচ পাভলভ-এর গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ‘Conditioned reflex’ বা শর্তাধীন প্রতিফলন। পরিপাকগ্রন্থি নিয়ে কাজ করতে করতে পাভলভ শর্তাধীন প্রতিফলনের সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন। যে শর্তাধীন প্রতিফলন গবেষণার হাত ধরে বস্তুবাদী মনোবিজ্ঞানের জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। পাভলভ ১৯০৪ সালে ‘ফিজিওলজি অ্যাণ্ড মেডিসিন’ বিভাগে নোবেল পুরস্কার পান তার গবেষণা কর্মের জন্য।
প্রাক-সম্মোহন প্রস্তুতি
সম্মোহন করার আগে যাকে সম্মোহিত করব, তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নেওয়াটা খুবই জরুরি। যখন কোনও সভায় বা সেমিনারে সম্মোহন করি, তখন সম্মোহন নিয়ে একটা মোটামুটি আলোচনা সেরে নিই। এই আলোচনা সাধারণত চলে আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত। বিপুল শ্রোতা ও দর্শকদের সামনে কয়েকজনকে সম্মোহন করে দেখাবার আগে এই সময়টা ব্যয় করা প্রয়োজনীয় বলে আমার মনে হয়। কারণ আলোচনা শেষে দর্শকদের কাছে আমি আবেদন রাখি, যাঁরা বাস্তবিকই সততার সঙ্গে আমার কথা বা ‘সাজেশন’ গভীর মনোযোেগর সঙ্গে শুনবেন, তাঁরা মঞ্চে উঠে আসুন।