আমরা খেজুরতলায় যা দেখেছি, যা পেয়েছি, সব-ই দেখান হল খোঁজ খবর-এ। তারপর দ্রুত কয়েকটি ঘটনা ঘটলো। (১) একটি বিজ্ঞান সংগঠন কুমড়ো কাশীপুর বাজার মোড়ে খেজুর তলার বুজরুকির বিরুদ্ধে সভা করতে গিয়ে আক্রান্ত হল। (২) বিশাল এলাকা জুড়ে যুক্তিবাদী সমিতির পোস্টার পড়ল, বিষয়— খেজুরতলার বুজরুকি। (৩) স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দাবদাহ’-তে আমার সত্যানুসন্ধান-এর রিপোর্ট এবং খেজুরতলার বুজরুকির খবর প্রকাশিত হতে-ই দাবদাহ-এর সম্পাদক কালীকুমার চক্রবর্তী খুনের হুমকি দেওয়া কয়েকটা ফোন পেলেন। একদিন বাড়িতে চড়াও হয়ে কয়েকজন হুমকি দিয়ে গেল। দলে চাকলা’র কয়েকজন মস্তান, কুমড়ো কাশীপুরের মস্তান ও যুক্তিবাদী সমিতি থেকে বহিষ্কৃত দীপককে দেখা গেছে। অশোকনগর থানাকে বিষয়টি জানিয়েছেন কালীকুমার চক্রবর্তী। (৪) ভক্তের ভিড়ে স্পষ্টত-ই ভাটার টান দেখা দিয়েছে।
২৩ দিন পর আবার আমরা হাজির হলাম খেজুরতলায়। এ’বারও আমি আর দেবজ্যোতি। হাবড়া থেকে আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন সুদীপ চক্রবর্তী। কাছি-কাছি অঞ্চলের যাঁরা রোগমুক্ত হতে মাটি খেয়েছেন, তাঁদের ঠিকানা গতবার-ই সংগ্রহ করা ছিল। সে’সব বাড়ি খুঁজে-খুঁজে তাঁদের শারীরিক অবস্থার খবর নিলাম। উপেন-এর মোড়ের এক নিঃসন্তান মহিলা মাটি খেয়ে পেট ব্যথায় নার্সিংহোমে ছিলেন পাঁচ দিন। মাটি-খাওয়া মানুষগুলো ক্যামেরার সামনে প্রচণ্ড ক্ষোভ উগরে দিলেন—বিশাল কষ্ট করে খেজুরতলায় গিয়ে মাটি খেয়ে রোগ তো সারেইনি, বরং বেড়েছে। মন্দির কমিটির দেওয়া রোগমুক্তদের তালিকা খুঁজতে গিয়ে অবাক হলাম, ওঁদের বাস্তব অস্তিত্ব-ই নেই।
গঙ্গানগর থানার ইটভাটায় দাঁড়িয়ে থাকে ডজন’খানেক লরিতে মাটি বোঝাই হচ্ছে দেখে আমাদের গাড়ি থামল। মাটি কোথায় যাবে? জিজ্ঞেস করতেই আশ্চর্য উত্তর পেলাম। রাতে এইসব লরি যাবে খেজুরতলায়, মাটি ফেলতে। কমে যাওয়া মাটি ভরাট করার কী বিচিত্র কারচুপি?
কুমড়ো কাশীপুরের মোড়ে এলাম। এখানে আমাদের জন্য আরও বিস্ময় অপেক্ষা করছিল। সেই ভিড় কোথায়? লোক কোথায়? ভক্তরা ভ্যানিশ?
হায় প্রোমোটার! হায় মন্দির কমিটি! হায় বুড়ি মা’র খেজুরতলা! গুজবের ঢাউস গ্যাস বেলুনে পিন ফোটাতেই ফু-উ-স, চুপসে মাটিতে।
খোঁজ খবর-এর দ্বিতীয় এপিসোডে দেখানো হল রসায়ন বিজ্ঞানী ডঃ শ্যামল রায়চৌধুরীর মতামত, আশিস সম্বন্ধে ডা. অমিতাভ ভট্টাচার্যের মতামত, মাটি ফেলার কেচ্ছা, মাটি খেয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষদের তীব্র ক্ষোভ ও