পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পীঠস্থান ও স্থান মাহাত্ম্য রহস্য
২১৩

ভূকেন্দ্রে পাঠান হতো। টেপের সংকেত প্রচার শেষ হলে টেপটা গুটিয়ে নিয়ে আবার সংকেত প্রেরণ শুরু করা হতো। এই টেপ গোটানোর সময় স্বভাবতই কোনও বেতার সংকেত পাঠানো সম্ভব নয়। ঘটনার দিন বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেলের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় স্যাটেলাইটটি সংকেত পাঠানো বন্ধ করে টেপ গোটাচ্ছিল। এই স্বাভাবিক ব্যাপারটাকেই অস্বাভাবিক হিসেবে পরিবেশন করেছিলেন চতুর রহস্য-ব্যবসায়ী লেখক।

 বার্লিৎজের তৈরি আর একটি গা শিরশিরে রহস্যময় ঘটনা হলো—ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের একটি বিমান মিয়ামি যাওয়ার পথে বার্মুডা পৌঁছতেই মিয়ামি বিমানবন্দরের র‍্যাডার থেকে অদৃশ্য হয়। বিমান হয়তো কোনও দুর্ঘটনায় পড়েছে, এমন অনুমান করে সমস্ত বিমান বন্দরকে মুহূর্তে সতর্ক করে দেওয়া হয়। অথচ, দশ মিনিট পরেই আবার বিমানটি র‍্যাডারে ধরা পড়ে। মিয়ামি বিমানবন্দরে অবতরণের পর দেখা যায় প্রত্যেক বিমানযাত্রীদের ঘড়ির সময় কোনও এক অদৃশ্য কারণে দশ মিনিট করে পিছিয়ে গেছে।

 রুশ-মার্কিন যৌথ অনুসন্ধানকারী দল অনুসন্ধান করে দেখেন, মিয়ামি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বা ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কোনও ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না। অর্থাৎ, ঘটনাটি আদৌ ঘটেনি।

 বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেল নিয়ে এমনি আরও গাদাগাদা তথাকথিত রহস্য নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে অনুসন্ধানকারীরা দেখেছেন, কোনটির পিছনেই সত্য নেই।

 কোনও সত্য যদি ঘটনাগুলোর পিছনে নাই থাকবে তবে বার্লিৎজ্ কেন এই ধরনের পাগলের মতো লিখতে গেলেন? অনেকের মনেই এই ধরনের প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। এমন পাগলামি করে রাতারাতি কোটিপতি ও বিখ্যাত হতে পারলে সেই সুযোেগ অনেক সুযোগ সন্ধানীরাই নেন বই কী। তবে, বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেলের আসল রহস্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর বার্লিৎজ্ আর বিখ্যাত নন, কুখ্যাত ব্যক্তি।