পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৮
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)

পরামনোবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করে বেশ কিছু বই প্রকাশ করেন। ডঃ জে. বি. রাইন পরবর্তীকালে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারাসাইকোলজি বিভাগের ডিরেক্টর নিযুক্ত হন। অবশ্য একসময় ডঃ রাইন-এর অবৈজ্ঞানিক কাজকর্মে অসন্তুষ্ট হয়ে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর ‘গবেষণা’ বন্ধ করে দেন। তাতে অবশ্য রাইনের মতো করিৎকর্মা লোক দমে না গিয়ে তাঁর স্ত্রী লুইসা ই. রাইন-এর সহযোগিতায় নর্থ ক্যারোলিনা স্টেটেই ডারহাম-এ Institute of Parapsychology প্রতিষ্ঠা করেন। ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর হন আর এক পরামনোবিজ্ঞানী ওয়াল্টার লেভি।

 ১৯৭৪-এর আগস্ট, পরামনোবিজ্ঞানীদের কাছে ‘কালা দিবস’ হিসেবে পরিচিত। এই বিশেষ দিনটিতে ওয়াল্টার লেভি সফল পরামনোবিদ্যার পরীক্ষা দিতে গিয়ে তাঁরই প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীদের হাতে ধরা পড়ে যান। তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে যাঁরা পরামনোবিদ্যার সত্যতায় বিশ্বাস স্থাপন করে অথবা সত্যতা অনুসন্ধানের জন্য এই ইনস্টিটিউটে যুক্ত হয়েছিলেন, তাঁরাই এই অতীন্দ্রিয় পরীক্ষার সফলতার পিছনে যে যান্ত্রিক কলা-কৌশল আছে—তা ফাঁস করে দেন। শ্রী ও শ্রীমতী রাইন-কে চূড়ান্ত অপ্রস্তুত অবস্থার মধ্যে ফেলে ওয়াল্টার লেভি পালিয়ে যান।


 ভারতেও পরামনোবিদ্যা নামক অবিজ্ঞানের ঢেউ এসে লেগেছে। ১৯৮৪-র ২১ ও ৩৩ এপ্রিল নয়াদিল্লির গান্ধী মেমোরিয়াল হলে পরামনোবিদ্যার এক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্র হয়ে ছিল। আমন্ত্রিত ছিলেন দেশ-বিদেশের প্রচার মাধ্যমগুলো ও কিছু ভি. আই. পি. ব্যক্তি। আর উপস্থিত ছিলেন পরামনোবিজ্ঞানী এবং সর্বোপরি পরামনোবিদ্যার অধিকারী অবতারেরা।

 ঈশ্বরের অবতারেরা প্রথম দিনেই বক্তব্য রাখলেন—যে বিদ্যা আয়ত্ত করা দুনিয়ার সব থেকে কঠিন, তা হলো পরাবিদ্যা। পরামনোবিদ্যাই হলো ব্রহ্ম বিদ্যা। পরাবিদ্যার সাহায্যে নিজেকে জানা যায়, নিজের আত্মাকে (?) জানা যায়।

 অধিবেশনে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এসেছিলেন লিন ডেভিড মার্টিন, দুবাই থেকে ঈশ্বর বাবা, কানাডা থেকে ফ্লাইংবাবা। আরও যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের সব অদ্ভুত অদ্ভুত নাম, যেমন, আত্মা বাবা, পাইলট বাবা, লাল বাবা, বালতি বাবা, তৎ বাবা, আরও কত কী। এছাড়াও ছিলেন স্বামী আত্মানন্দ, সাধক সন্তোষ চট্টোপাধ্যায় প্রভৃতি। বাবাদের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার খবর আমাদের দেশের প্রায় সব-ভাষাভাষীর প্রধান পত্র-পত্রিকাগুলোতেই প্রকাশিত হয়েছিল। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবেদনটির কিছুটা এখানে তুলে দিচ্ছি। এই প্রতিবেদনটি পড়লে বাবাদের ক্ষমতার কিছুটা আঁচ, আপনারা পাবেন বই কী:

 এক একজন এক এক ধাঁচের অলৌকিক শক্তির অধিকারী। কেউ নাকি মাসের পর মাস সমাধিস্থ থাকতে পারেন প্রাণ স্পন্দনকেও থামিয়ে দিয়ে। কেউ আবার