সমিতি’র সঙ্গে যুক্ত হতে চান অনেকেই। বেনো জল ঢোকার সম্ভাবনা প্রবল। হুজুগে অনেকেই আসবেন। কিন্তু লক্ষ্য ও তার জন্য ঝুঁকি নেবার প্রশ্ন এলে অনেকেই খসে পড়বে—জানি। ‘যুক্তিবাদী সমিতি’ মানে একটা প্রগতিশীল ব্যাপার। এ জন্যেও অনেকে ভিড়তে চাইতে-ই পারেন। আবার জনপ্রিয় একটা দলে ভিড়ে সুবিধে আদায় করতে আগ্রহী লোকের অভাব নেই এদেশে।
কুসংস্কার বিরোধী অনুষ্ঠান ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ অনুষ্ঠান করে বেড়াচ্ছি পশ্চিমবাংলার গ্রামে-শহরে-আধা শহরে। তিনজনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দুই তরুণ—গুপী ও সঞ্জয়। তারপর একে একে তন্ময়, কণিষ্ক, কাজল, কমল, রঘু, আশিস। এবার পুরোদস্তুর স্টাডি ক্লাসের প্রয়োজন অনুভব করলাম। ‘স্টাডি ক্লাস’ না হলে যুক্তিবাদী সমিতি আর পাঁচটা ক্লাবের মতো একটা ক্লাব হয়ে যাবে। এগিয়ে এলেন ‘কিশোর ভারতী’ স্কুলের হেডমাস্টার মিহির সেনগুপ্ত। তিনি প্রতি রবিবার ক্লাস করার জন্য ছেড়ে দিলেন স্কুল। তর্কে-বিতর্কে-আলোচনায় জমে গেল। পুরোনোদের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য নতুন সংযোজন মানিক মৈত্র, ডাঃ সমিত ঘোষ, মিহির সেনগুপ্ত, ড. অপরাজিত বসু, ডাঃ বিষ্ণু মুখার্জি, অভিনেতা শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়।
জন্মলগ্ন থেকেই যুক্তিবাদী সমিতি ঝড় তুলে এগিয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও আকাশবাণী আমাদের কাজ-কর্মকে, বাবাজি-মাতাজিদের বুজরুকি ধরাকে বার-বার তুলে ধরেছে। বহু সাংবাদিক আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ আমাদের সমিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন। লক্ষ্মীন্দ্রকুমার সরকার, পথিক গুহ, অভিজিৎ দাশগুপ্ত, অনন্যা চ্যাটার্জির নাম কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি। ‘আজকাল’ পত্রিকার সম্পাদক অশোক দাশগুপ্ত সেসময় ছিলেন আমাদের আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ। ১৯৮৮ সালের ১১ ডিসেম্বরে কলকাতা ময়দানে আমাদের হাতে বয় স্কাউট টেণ্টের চাবি তুলে দেন ডাঃ অরুণ শীল। সেদিন এক বিশাল সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। ডাইনি সম্রাজ্ঞী ঈপ্সিতা রায় চক্রবর্তী এবং আরও কয়েকজনের অলৌকিক ক্ষমতার পরীক্ষা নিতে। সেই দিনই প্রকাশিত হল ‘কিশোর যুক্তিবাদী’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যা। নাম অলংকরণ করেছিলেন আমাদের সমিতির সেই সময়কার সহ-সম্পাদক চন্দন ভট্টাচার্য। অসাধারণ অলংকরণ। পত্রিকাটির প্রথম সম্পাদক পিনাকী ঘোষ।
১৯৮৯ সালে একটি রাজনৈতিক দল ‘যুক্তিবাদী সমিতি’ দখলের এক ব্যর্থ