বোঝালেন সৌরমণ্ডল, পাখি, ব্রিজ, ঘুড়ি, তীর ইত্যাদি। গেলার সংকেত উদ্ধারে সমর্থ হলেন। এইসব ক্ষেত্রে গেলার নিশ্চয়ই সৌরমণ্ডল, পাখি, ব্রিজ, ঘুড়ি, তীরের ছবিই আঁকবেন। অতএব খামের ও গেলারের ছবির মধ্যে মোটামুটি একটা সাধারণ মিলও খুঁজে পাওয়া যাবে।
কিন্তু বাস্তবিকই অতীন্দ্রিয় ক্ষমতায় শিল্পীর দৃষ্টির মধ্য দিয়ে গেলার যদি ছবিগুলি দেখতেই পেতেন, তবে খামের ছবি ও ইউরির ছবির মধ্যে এত বেশি অসংগতি দেখা যেত না।
এই প্রসঙ্গে একটি খবর জানানো খুবই প্রয়োজনীয় বলে মনে করছি। বধিরদের শোনার জন্য একটি ছোট্ট যন্ত্রের পেটেণ্ট করানো আছে ইউরির গডফাদার ডঃ পুহারিক-এর নামে। একটি দাঁত তুলে সেই জায়গায় যন্ত্রটি বসানো হয়। যন্ত্রটি বাইরে থেকে পাঠানো তড়িৎ চুম্বকীয় সংকেত ধরে, শ্রবণযোগ্য তরঙ্গে পরিণত করে, দাঁতের প্রান্তভাগের স্নায়ুর সাহায্যে মস্তিষ্কের উদ্দেশ্যে তড়িৎ সংকেত পাঠায়। ফলে কানের সাহায্য ছাড়াই শোনা যায়।
গেলারের এই ধরনের যন্ত্রের সাহায্য নেবার সুযোগ ছিল। শিপিরও সুযোগ ছিল দেহের কোথাও প্রেরকযন্ত্র লুকিয়ে রাখার। তাই গেলার, শিপিসহ তাঁদের সম্ভাব্য প্রতিটি সহযোগিদের ব্যাপক তল্লাশি নেওয়া নিরপেক্ষ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য একান্তই অপরিহার্য ছিল। সাংবাদিকদের কাছ থেকে তল্লাশির প্রস্তাব আসা সত্ত্বেও পরীক্ষা পরিচালন কর্তৃপক্ষ সেই প্রস্তাব সরাসরি বাতিল করে দেন। অতএব বলতেই পারি ইউরির সংকেত গ্রহণের সুযোগ ছিল।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাগুলো দারুণ সোরগোল তুলে জানিয়েছে—ইলেকট্রিকালি শিল্ডের ঘরে কোনওভাবেই কোনও সঙ্কেত পাঠানো সম্ভব ছিল না। তাই তল্লাশি বাতিল হয়েছে। বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলে। S.R.I. রিপোর্ট আমি পড়েছি। তাতে স্পষ্টতই বলা আছে “in certain circumstances, significiant information transmission can take place under shielded conditions.” অর্থাৎ সঙ্কেত প্রেরণ সম্ভব ছিল।
‘নেচার’ পত্রিকায় গেলারের উপর প্রকাশিত এই রিপোর্টটি তৈরি করেছিলেন ডঃ পুটহফ এবং ডঃ টার্গ। লেখাটি প্রকাশের আগে ‘নেচার’ কর্তৃপক্ষ তিনজন বিজ্ঞানীকে লেখাটি পড়তে দেন এবং মতামত চান। একজন জানান, লেখাটি কিছুতেই প্রকাশ করা উচিত নয়। দ্বিতীয় জন জানান, লেখাটিতে এমন কিছুই পাননি যাতে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ জাতীয় কোনও মন্তব্য করতে পারেন। তৃতীয় জন জানান, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এবং ‘নেচার’ পত্রিকার তরফ থেকে কোনও দায়িত্ব না নিয়ে প্রবন্ধটি প্রকাশ করা যেতে পারে।
S.R.I. পরীক্ষা গ্রহণের প্রায় দু-বছর পরে ‘নেচার’ রিপোর্টটি প্রকাশ করে, সঙ্গে ছিল এক দীর্ঘ সম্পাদকীয়। সম্পাদকীয় বক্তব্যে এ কথা স্পষ্টই বলে দেওয়া