মানুষকে সৃষ্টি করে নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণ সঞ্চার করেন। অর্থাৎ আত্মার জন্ম দেন। বিভিন্ন ধর্ম আত্মার জন্ম নিয়েও বিভিন্ন ধারণা গড়ে তুলেছে।
আত্মা ও পুনর্জন্ম বিষয়ে সব ধর্মমতই নিজের বিশ্বাসকেই একমাত্র সাচ্চা' বলে ছাপ মারতে চায়। আপনি এই বিষয়ে কোন ধর্মমতকে বিশ্বাসযােগ্য বলে গ্রহণ করবেন? এবং কেন গ্রহণ করবেন? আপনি একটি বিশেষ ধর্মাবলম্বী, একমাত্র এই যােগ্যতার গুণেই কী আপনার ধর্মের সব ধারণা আপনার কাছে অভ্রান্ত হয়ে যাবে?
মেটি প্রাণী ও মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। হাজার হাজার বছরে এই যে বিশাল প্রাণী সংখ্যার বৃদ্ধির এর অর্থ কী এই নয় যে, আত্মারাও জন্মাচ্ছে বলেই বৃদ্ধি পাচ্ছে?
আত্মা কী নিজেদের ভাগ করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে স্বামী অভেদানন্দ বলেছেন, “না, তা পারে না।”
আত্মা না জন্মালে, না, বাড়লে প্রাণী বাড়ছে কি করে? উত্তর নেই।
স্বামী অভেদানন্দ একটি মারাত্মক বিপজ্জনক কথা বলেছেন,
“আত্মার অস্তিত্ব অস্বীকার করলে মানুষের শিক্ষাদীক্ষা
চরিত্রগঠনে প্রভৃতি আর দরকারি
বলে অনুভূত হবে না।”
তিনি এমন অদ্ভুত তথ্যটি আবিষ্কার করলেন কীভাবে? বিশ্বের প্রতিটি বিজ্ঞানমনস্ক বিজ্ঞান, প্রতিটি যুক্তিবাদী মানুষ আত্মার অস্তিত্বকে অস্বীকার করেন। তারা শিক্ষা দীক্ষায় বা চরিত্রগঠনে আত্মবিশ্বাসীদের চেয়ে পিছিয়ে আছেন?
ভেজালের কারবারি, চোর, ডাকাত, খুন, ধর্ষণকারী—এদের ওপর সমীক্ষা চালালেই দেখতে পাবেন, এদের শতকরা প্রায় ১০০ ভাগই আত্মার অস্তিত্বে এবং হিন্দু হলে পরজন্মেও বিশ্বাস করে। কিন্তু এই ধর্মীয় ধারণা কি তাদের পাপ কাজ থেকে দূরে রাখতে পেরেছে?
আত্মার অস্তিত্বের স্বীকার বা অস্বীকারের ওপর শিক্ষাদীক্ষা বা
চরিত্রগঠন নির্ভর করে না। নির্ভর করে সেই দেশের
আর্থ-সামাজিক (Socio-economic) এবং
সমাজ-সাংস্কৃতিক (Socio-cultural)
পরিবেশের ওপর।
স্বামী অভেদানন্দ আরও বলেছেন, “অজ্ঞ শ্রেণির লােকেরা এখনাে বিশ্বাস করে যে, আত্মা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে এবং দেহ ব্যতীত তার অস্তিত্ব থাকতে পারে।”